ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কর্মসংস্থানের সুযোগ কমছে : বিশ্বব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:০৪ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কর্মসংস্থান সুযোগ সে তুলনায় বাড়ছে না। সাম্প্রতিক সময়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমেছে। ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ৩ দশমিক ১ শতাংশ হারে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র বেড়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে ২০১১-২০১৬ পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে ১ দশমিক ৮ শতাংশ হারে কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্মহীনতার এই নেতিবাচক প্রভাব যুব ও নারীদের ওপর বেশি পড়েছে। তাই সবার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য মূল চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

বুধবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।

তিনি বলেন প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের উপরে সেটা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। কিন্তু এ প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। আমাাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে গতি কমে গেছে। গার্মেন্ট সেক্টরে কর্মসংস্থান কমেছে। বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থান এ সেক্টরে বেশি হলেও সম্প্রতি তা কমে গেছে।

তিনি বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টির চালিকা দুর্বল। রফতানি ও রেমিট্যান্স কমে গেছে, যেটা কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস। গতকাল মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের মধ্যে সবার কর্মসংস্থান হবে। তখন দেশে কোনো গরিব থাকবে না। শুধু ৭ শতাংশ বাদে যারা শারীরিকভাবে অক্ষম সরকার তাদের সাহায্য করবে।

ড. জাহিদ হোসেন বলেন, শিক্ষিত বেকার বেড়েই চলছে আর এজন্য প্রয়োজন প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা। বাংলদেশে শ্রমনিবিড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ জিডিপি অনুপাতে বাড়েনি।

ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এজন্য অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, এখনও ৮০ শতাংশের বেশি রফতানি হয় গার্মেন্ট খাত থেকে। বহুমুখী রফতানির কথা কয়েক বছর ধরে বলা হলেও সেটা দেখা যাচ্ছে না। তিনি রফতানিতে ব্যালান্স আনার পরামর্শ দেন।

গত দুই বছরে রেমিট্যান্স কমেছে জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, গত দুই বছরে ১৬ লাখ শ্রমিক দেশের বাইরে গেছে। কিন্তু তারপরও রেমিট্যান্স কমেছে। আমাদের মনে হয় ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে অনেক শর্ত থাকায় অবৈধ পথে রেমিট্যান্স আসছে। মানসম্পন্নকর্মী বিশেষ করে ম্যানেজার লেবেলের কর্মী ঢাকার বাইরে পাওয়া কঠিন।

এই বিষয়ে জাহিদ হোসেন আরও বলেন, এজন্য ঢাকার বাইরেরও অবকাঠামো উন্নতি করতে হবে। সেখানের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিশ্বব্যাংক খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বিশ্বব্যাংক এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহায়তা করছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালিক বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বছর ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির যে আশার কথা শুনিয়েছে, তা অর্জন করতে হলে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। এর মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেসরকারি খাতে ‘প্রচুর বিনিয়োগ’ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, যা করতে না পারলে আগামী অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৪ শতাংশের বেশি হবে না।

অনুষ্ঠান অন্যদের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মেহরীন এ মাহবুব উপস্থিত ছিলেন।

একে/আইআই