রমজান : চোরাই মসলায় সয়লাব বাজার
রমজানকে সামনে রেখে চোরাই মসলায় ছেয়ে গেছে রাজধানীর বাজার। ফলে বেকায়দায় পড়েছে দেশীয় মসলা উৎপাদনকারী, বাজারজাতাকারী ও আমদানিকারকরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বুধবার জাগো নিউজকে জানান, রমজানকে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এটি প্রতি বছর করে। কোন ভাবেই এটি বন্ধ করা যাচ্ছে না। এটি বাজারের জন্য ভালো নয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের প্রধান পাইকারি বাজারগুলো থেকে মসলা সরবরাহ কমে গেছে। দেশে আমদানি করা মসলার মাত্র ২৫ শতাংশ আসছে বৈধ পথে। বেশির ভাগ মসলা অবৈধভাবে আসায় সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। একই কথা বলেছেন, খুচরা পর্যায়ে বিক্রির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরাও।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী চোরাচালানের মাধ্যমে মসলা আনছে। এসব চোরাকারবারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বছরে এ খাতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অবৈধ পথে আসা মসলা বাজারে কম দামে বিক্রি হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে অসম প্রতিযোগিতাও।
এদিকে, দেশের ছয়টি সীমান্ত পথ দিয়ে চোরাই পথে ভারত, মিয়ানমার ও নেপাল থেকে চট্টগ্রামে আসছে মসলা। ভোমরা ও হিলি বন্দর, ফেনীর ছাগলনাইয়া, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মিয়া বাজার, নওগাঁ ও নোয়াখালীর সীমান্ত পথ দিয়ে দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে চোরাইপথে আসা এসব মসলা বাজারজাত করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে বছরে মসলার চাহিদা ২৫ থেকে ৩০ হাজার টন। তবে শুল্ক বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে বৈধপথে মসলা আমদানি হয়েছে মাত্র আড়াই হাজার টন। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল আট হাজার টন।
পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ব্যবসায়ীরা জানান, চোরাই পথে সরাসরি দেশের বিভিন্ন স্থানে মসলা যাচ্ছে। আমদানি করা মসলার চেয়ে অনেক কম দামেও বিক্রি হচ্ছে চোরায় পথে আসা মসলাগুলো।
জানতে চাইলে মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী তানভীর আমিন জাগো নিউজকে মঙ্গলবার রাতে জানান, অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে দৃশ্যমান উদ্যোগ জরুরি।
এদিকে, এসব চোরাই মসলার ব্যবসা ঠেকাতে রমজান মাস জুড়ে বিশেষ অভিযান চালাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাজার তদারকির আওতায় এটি করা হবে।
এসএ/এএইচ/আরআইপি