পরীক্ষার আগেই ঝরে পড়লো দুই লক্ষাধিক শিক্ষার্থী
২০১৬ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টির্ফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেও দুই লাখ ২০ হাজার ৫৪০ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেনি। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ না নেয়াকে ঝরে পড়া হিসেবেই দেখছেন শিক্ষাবিদরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য দুই বছর আগে নবম শ্রেণিতে নিবন্ধন করে ১৬ লাখ ৯৫ হাজার ৪৬৭ জন। তাদের মধ্যে ২০১৬ এর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করেছে ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯২৭ জন। অর্থাৎ দুই লাখ ২০ হাজার ৫৪০ জন শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না। এছাড়া ফরম পূরণ করলেও অসংখ্য পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয় না। পরীক্ষায় অংশ না নেয়ার সংখ্যা প্রতি বছরই বেড়ে চলছে। গত বছর এক লাখ ৮৭ হাজার ৩৭৮ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেও পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। গত বছরের চেয়ে এবার বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৩ হাজার ১৬২ জন।
শিক্ষাবিদদের মতে, স্কুলগুলোর শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করানোর প্রতিযোগিতার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান টেস্ট পরীক্ষায় ভালো ফল না করলে ফরমপূরণের সুযোগ দেয় না। যে কারণে এ সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া দারিদ্রতা, ছাত্রীদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটছে।
এদিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর জেলার টঙ্গীর মন্নু টেক্সটাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন না করানোর প্রতিবাদ এবং প্রবেশপত্র সরবরাহের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শতাধিক শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু চেয়ার-টেবিল, দরজা ও বেঞ্চ ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় নিবন্ধনের জন্য স্কুলে টাকা জমা দেয় ১৪৩ পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার সময় এগিয়ে এলেও প্রবেশপত্র ও নিবন্ধন কার্ড সরবরাহ না করে টালবাহানা করতে থাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এরই প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। এ ধরনের অনেক ঘটনা সারাদেশে ঘটেছে।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, এত বিপুল শিক্ষার্থীর চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ না নেয়াকে ঝরে যাওয়াই বলবো আমি। অংশ না নেয়ার বিষয়ে শুধু টেস্ট পরীক্ষায় খারাপ করার কথা যদি বলা হয় তাহলে বলতে হবে এটি শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা। এর সঙ্গে সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক, কোচিং বাণিজ্যের ভীতি ও আর্থিক দুরবস্থার কারণেও এটি হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ বলেন, নবম শ্রেণিতে নিবন্ধিত হলেও যারা দশম শ্রেণিতে টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে না তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয় না। এটি অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৮ মার্চ শেষ হবে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ৯ মার্চ থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ১৪ মার্চ।
এনএম/বিএ
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ প্রাথমিক শিক্ষকদের শাটডাউন স্থগিত, রোববার থেকে পরীক্ষা
- ২ আন্দোলন করা অসংখ্য প্রাথমিক শিক্ষককে ভিন্ন জেলায় বদলি
- ৩ পরীক্ষা না নেওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষকের মাথা ফাটালেন অভিভাবকরা
- ৪ অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক নিয়োগে নতুন শর্ত, তৃতীয় বিভাগ থাকলেই অযোগ্য
- ৫ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যারিয়ার ফেয়ার, অংশ নিলো ৬০ প্রতিষ্ঠান