বইমেলার প্রামাণ্য ইতিহাস প্রণয়ন জরুরি
বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলা এখন বিশ্বের দীর্ঘ সময়ব্যাপ্ত গ্রন্থমেলার স্বীকৃতি অর্জন করেছে। একুশের অমলিন চেতনার গ্রন্থমেলার সঙ্গে গত কয়েক বছরে যুক্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাত্রা। তবে এখন আমাদের গ্রন্থমেলা নিয়ে কিছু অগ্রবর্তী ভাবনারও সময় এসেছে। অনতিবিলম্বে অমর একুশে গ্রন্থমেলার একটি প্রামাণ্য ইতিহাস প্রণয়ন করা জরুরি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : অমর একুশে গ্রন্থমেলা অতীত থেকে বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক বদিউদ্দিন নাজির। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মুহম্মদ জাহাঙ্গীর, ড. জালাল আহমেদ এবং খান মাহবুব। সভাপতিত্ব করেন এমেরিটাস প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমদ।
বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে অমর একুশে গ্রন্থমেলার একটি প্রামাণ্য ইতিহাস প্রণয়ন করা জরুরি। সেই সঙ্গে মেলায় এ দেশের পথিকৃৎ প্রকাশকদের ছবি ও পরিচিতি সংবলিত একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা উচিৎ; যার মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে গ্রন্থসুহৃদ পূর্বসুরীদের।
এছাড়া অমর একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজনে মাসব্যাপী আলোচনায় বইয়ের সম্পাদনা, মুদ্রণ, বিপণন ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠে আসে তাদের বক্তব্যে। একইসঙ্গে বলা হয়, গণমাধ্যমে বইয়ের প্রচারের ক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকাও প্রয়োজন, যার মাধ্যমে প্রকৃত ভালো বই পাঠকের কাছে পৌঁছাতে পারে।
বদিউদ্দিন নাজির তার উপস্থাপিত প্রবন্ধে বলেন, দেশের প্রকাশক ও পাঠকদের জন্য বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলা হয়ে উঠেছে মহামিলনতীর্থ। বলতে গেলে বাংলাদেশের সৃজনশীল গ্রন্থের প্রকাশনাই এখন অমর একুশে গ্রন্থমেলাভিত্তিক হয়ে উঠেছে। এক সময় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে গ্রন্থমেলার স্থান সংকুলান করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। আর তাই ২০১৪ সাল থেকে মেলাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। তবে বলতে গেলে মূল গ্রন্থমেলাটি এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলা আজ এক সাংস্কৃতিক মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। এর অতীতে ফিরে তাকানোর পাশাপাশি বর্তমানের অভিজ্ঞতায় ভবিষ্যতের দিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে, যেন একুশে গ্রন্থমেলাকে যথার্থই জ্ঞানভিত্তিক বাংলাদেশ গঠনের মাধ্যম হিসেবে কাজে লাগানো যায়।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তিতে অংশ নেন প্রকাশ সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা। এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ফয়জুল আলম পাপ্পু। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন- কণ্ঠশিল্পী শাহীন সামাদ, কল্যাণী ঘোষ, বুলবুল মহলানবীশ, মাহমুদ সেলিম, হায়দার হোসেন, মাহমুদুজ্জামান বাবু এবং শেখ মিলন। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন- গৌতম মজুমদার (তবলা), শেখ আবু জাফর (বাঁশি), মো. ফারুক (প্যাড), শাহরাজ চৌধুরী (গিটার) এবং সুমন রেজা খান (কি-বোর্ড)।
এএসএস/এমএইচ/এনএফ/পিআর