নির্ভয়ে গাইবেন পাকিস্তানের নারীরা, সাহস জোগাবে ‘ভয়েস অব হার’
সামরা খানের ‘ভয়েস অব হার’ উদ্যোগের সঙ্গী জারা মাদনি ও মাইরা খান
পাকিস্তানের সংগীতজগতে নারী শিল্পীদের জন্য সুযোগ সবসময়ই সীমিত ছিল। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কিছুটা দৃশ্যমানতা মিললেও মঞ্চের পারফর্ম নারীদের জন্য এখনো অনেকের নাগালের বাইরে। দেশটির রক্ষণশীল মানসিকতা, নিরাপত্তার অভাব কিংবা আয়োজকদের অনীহা মিলিয়ে নারীদের জন্য পাকিস্তানের সংগীতচর্চার মঞ্চে টিকে থাকা কঠিন।
এই বাস্তবতাকে বদলাতে এগিয়ে এসেছেন দুবাইভিত্তিক পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী সামরা খান। তার নেতৃত্বে শুরু হয়েছে এক নতুন উদ্যোগ ‘ভয়েস অব হার’।
সামরা এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় বলেন, ‘এটি শুধু একটি অনুষ্ঠান নয় বরং একটি আন্দোলন। একটি সহযাত্রা, একটি নারী-ভ্রাতৃত্বের বন্ধনও বলা যায় এটিকে। যখন আমি নিজে একজন নতুন শিল্পী হিসেবে শুরু করি তখন খুব একা লাগত। নারীদের জন্য পারফর্ম করার জায়গা ছিল না বললেই চলে। তাই ভেবেছিলাম, আমরা নিজেরাই কেন সেই জায়গাটা তৈরি করব না?’
তিনি দাবি করেন, সেই ভাবনা থেকেই জন্ম নেয় ভয়েস অব হার। এটি একটি প্ল্যাটফর্ম যা দেশটির বিভিন্ন প্রান্তের নারী সংগীতশিল্পীদের একত্র করে তাদের উপহার দেবে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ মঞ্চ।
আগামী ২৬ অক্টোবর করাচির ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব পারফর্মিং আর্টসে (নাপা) অনুষ্ঠিত হবে ‘ভয়েস অব হার’র প্রথম কনসার্ট। এই আয়োজন হচ্ছে পিংক রিবন পাকিস্তানের সহযোগিতায়। প্রতিষ্ঠানটি স্তন ক্যান্সার সচেতনতা নিয়ে কাজ করে।
সামরা খান বলেন, ‘অক্টোবর হলো স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস। তাই এই প্রথম কনসার্ট থেকেই আমরা চেয়েছি একটি মানবিক উদ্দেশ্য রাখতে। এই আয়োজনে যা আয় হবে তার একটি অংশ যাবে লাহোরে পিংক রিবনের ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণে।’
সামরা খানের এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন আরও দুই সংগীতশিল্পী জারা মাদনি ও মাইরা খান। দুজনই পাকিস্তানের নারী সংগীতের নতুন কণ্ঠ। জারা একজন অসাধারণ গায়িকা আর মাইরা সিতার ও গিটার বাজাতে পারদর্শী। তিনজন মিলে এই কনসার্টে তুলে ধরবেন নিজস্ব গান ও জনপ্রিয় কিছু পরিবেশনা।
কনসার্টের সৃজনশীল নির্দেশনায় রয়েছেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় ড্রামার ও প্রযোজক গামবি।
সামরার মনে করছেন, এই উদ্যোগ কেবল পাকিস্তানি নারী সংগীতশিল্পীদের জন্য মঞ্চ তৈরি করছে না বরং দেখিয়ে দিচ্ছে সৌন্দর্য ও শিল্পচর্চা তখনই অর্থবহ হয় যখন তা সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ থাকে।
এলআইএ/এএসএম