সরকারকে যে অনুরোধ করলেন ফরিদা পারভীনের বড় ছেলে
ফাইল ছবি
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছেন দেশবরেণ্য লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তার উন্নত চিকিৎসায় সরকারকে পাশে চাইছেন বড় ছেলে ইমাম নিমেরী উপল। তার চাওয়া, রোগব্যাধিতে নিরন্তর ধুঁকতে থাকা ফরিদা পারভীনকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর বিষয়ে সরকার যেন উদ্যোগী হয়।
নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় শিল্পীকে। কিন্তু ডায়ালাইসিসের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তখন চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
৭১ বছর বয়সী ফরিদা পারভীনের অসুস্থতা দীর্ঘদিনের। কিডনি সমস্যা ও ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতা রয়েছে তার। কিডনি ডায়ালাইসিস চলছে নিয়মিত। জানা গেছে, ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। তার ডায়ালাইসিসও চলছে। ছেলে ইমাম নিমেরি উপল জানিয়েছেন, ‘আম্মাকে ডায়ালাইসিস করতে নিয়ে গিয়েছিলাম। এরপর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়। তারপর তো আইসিইউতে ভর্তি করাতে হয়।’
জুলাইয়ে ফরিদা পারভীনকে দেখতে হাসপাতালে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মেডিকেল বোর্ড গঠনের দাবি রেখেছিলেন। এরপর মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও ফরিদা পারভীনের চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছিলেন সেবার।
নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান দিয়ে সংগীত জীবন শুরু করলেও পরে তিনি ভিড়ে যান লালনের গানে। এরপর জীবনভর লালনগীতি চর্চায়ই ডুবে থেকেছেন এই শিল্পী।
সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন। ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার পান তিনি।
বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন এই শিল্পী। সেরা প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে।
ফরিদা পারভীনের কণ্ঠে লালনের গানের যে চর্চা হয়ে এসেছে গত পাঁচ দশক ধরে, সেটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে প্রায় ১৬ বছর আগে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘অচিন পাখি সংগীত একাডেমি’। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা, প্রতিষ্ঠানের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়া এবং নিজস্ব ভবন না থাকায় এ প্রতিষ্ঠানটিও টিকে থাকার লড়াইয়ে ভুগছে।
এমআই/এলআইএ/জিকেএস