ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

কিডনি চিকিৎসার সক্ষমতা : কমছে নাকি বাড়ছে?

প্রকাশিত: ০৬:৩৭ পিএম, ০৫ মার্চ ২০১৬

দেশে কিডনি রোগের সুচিকিৎসার সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। দেশে দেড় কোটি কিডনি রোগীর চিকিৎসা প্রদানের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নেফ্রোলজিস্ট মাত্র ১০০ থেকে ১২০ জন। প্রতিটি রোগীকে ভালো করে দেখতে হলে একজন নেফ্রোলজিস্টকে প্রতিদিন সাড়ে ৮শ’ রোগী দেখতে হবে।

দেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে শতাধিক মেডিকেল কলেজ গড়ে উঠলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বেসরকারি মেডিকেল থেকে যারা এমবিবিএস পাশ করে বের হচ্ছেন তারা অধ্যয়নকালে হাসপাতালে কিডনি রোগী দেখার সুযোগ পান না। কিডনি রোগের সাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা সিরাম ক্রিটেনিন, ইলেট্রোলাইড ও জিএফআর (গ্লুমিরোলার ফিলট্রেশন রেট) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তারা হা করে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন। এরা ভবিষ্যতে কিভাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হবেন।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে আসন্ন বিশ্ব কিডনি দিবস ২০১৬ উদযাপন উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা  কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস) আয়োজিত ‘শিশুদের কিডনি রোগ: শুরুতেই প্রতিরোধ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এমনই বোমা ফাটালেন দেশের অন্যতম কিডনি বিশেষজ্ঞ কিডনি ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ।

জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনও সকাল ৯টা থেকে হাসপাতালে রাত ১০টা পর্যন্ত আউটডোর ইনডোরে নিয়মিত রোগী দেখেন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি না হওয়ায় কিডনি রোগীরা তার কাছেসহ হাতেগোনা কিছু সংখ্যক বিশেষজ্ঞের চেম্বারে ভিড় জমান। অধিক সংখ্যক রোগী দেখতে বাধ্য হওয়ায় প্রয়োজনীয় সময় নিয়ে অনেক সময় রোগী দেখতে পারেন না। দেশে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কিডনি বিশেষজজ্ঞ তৈরির বিষয়টি নিয়ে সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে বলে তিনি জানান।

সিরাম ক্রিটেনিন লেবেল কত হলে একজন রোগীকে ডায়ালাইসিস করতে হয় এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. হারুন বলেন, দেশভেদে লেবেল ৫ থেকে ১৫ পর্যন্ত রোগীকে ডায়ালাইসিস দিতে হয়। তার মতে, নানা কারণে বাংলাদেশের রোগীদের ক্ষেত্রে তিনি লেবেল ৫ অতিক্রম করলে ডায়ালাইসিসের পরামর্শ দেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীরা তা মানেন না। তারা গুরুতর অসুস্থ ও লেবেল ১০ না হওয়া পর্যন্ত ডায়ালাইসিস করাতে চান না। অনেক সময় রোগীরা ভুল বুঝেন। কিন্তু তারা জানেন না আগে থেকে ডায়ালাইসিস করলে রোগী বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারে।

ডা. হারুন অর রশীদের এ বক্তব্যে আয়োজক ক্যাম্পস সভাপতি কিছুটা বিব্রত হয়ে বলেন, দেশে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কিডনি বিশেষজ্ঞ তৈরি না হওয়ায় স্যার হয়তো ক্ষোভ থেকে চিকিৎসা সক্ষমতা কমছে বলছেন কিন্তু সার্বিকভাবে গত কয়েক বছরে দেশে কিডনি চিকিৎসার সক্ষমতা আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের মতো মানুষকে আর বিদেশ দৌড়াতে হয় না।

অনুষ্ঠানে শামসুল আলম নামে একজন কিডনি রোগীর বাবা জানান, ২০০৭ সালে দেশের এক কিডনি বিশেষজ্ঞ তার মেয়ের কিডনি রোগ সঠিকভাবে শনাক্ত  করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে তিনি মেয়েকে ভারতের ভেলোরের সিএমসি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেই থেকে সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিয়ে মেয়ে বেশ সুস্থ রয়েছেন। তার বিয়ে ও সন্তানও হয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের অধিকাংশ চিকিৎসক মুখে যা বলেন তা করেন না।

এমইউ/বিএ