গাজায় শিশুদের দুধের বদলে পানি খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছেন মায়েরা
অপুষ্টিতে ভোগা ২ বছর বয়সী ছেলে ইয়াজানকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন ৩০ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি মা নাঈমা/ ছবি: এএফপি
ইসরায়েলের কঠোর অবরোধে গাজার খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে, আর এর সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে সেখানকার নবজাতক ও শিশুদের ওপর। দুধ ও শিশু ফর্মুলার সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গাজার অনেক মা এখন তাদের শিশুদের দুধের বদলে শুধু পানি খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছেন।
জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গাজায় এখন ‘দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ’ বাস্তবে ঘটছে। শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য না থাকায় ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় গাজায় শিশু মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
মানবাধিকার ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষকদের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অনাহারে মারা গেছে ৮৮ জনেরও বেশি শিশু। শিশুরা মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে, এবং চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় অনেকের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুধ ও শিশু ফর্মুলা ছাড়া জন্মের পরবর্তী সময়টি শিশুদের জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। স্বাভাবিকভাবে এই বয়সে যেসব শিশু শুধু মায়ের দুধ বা ফর্মুলা খেয়ে বেঁচে থাকে, তারা এখন শুধুই পানি পেয়ে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছে।
গাজার সবচেয়ে ছোট সদস্যরা এই দুর্ভিক্ষের মুখে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে, বলেছে জাতিসংঘের এক বিবৃতি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা এই সংকট সমাধানে অবিলম্বে মানবিক করিডোর খুলে দিয়ে খাদ্য, ওষুধ এবং শিশু পুষ্টিসামগ্রী প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমানে গাজায় চিকিৎসাসেবা প্রায় ভেঙে পড়েছে, খাবারের মজুত নিঃশেষ, আর বিশুদ্ধ পানির সংকট দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে। এসব মিলিয়ে এক গভীর মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি অঞ্চলটির বাসিন্দারা।
সূত্র: আল জাজিরা
এসএএইচ