পশ্চিমবঙ্গ
বন্যায় ডুবেছে গ্রাম, ভেলায় শুইয়ে রোগীকে নেওয়া হচ্ছে হাসপাতালে
কলার ভেলায় করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাদুড়িয়া গ্রামের একটি পরিবার/ প্রতিনিধির পাঠানো ছবি
ভোট আসে, ভোট যায় কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দল প্রতিশ্রুতি রাখে না। ভোট এলেই প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের প্রতিশ্রুতি বর্ষার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। তবে সেই প্রতিশ্রুতি, প্রতিশ্রুতিই থেকে যায়।
বর্ষার জমা পানির ওপর কলার ভেলায় করে অসুস্থ রোগীকে নিয়ে যেতে হচ্ছে হাসপাতালে। এমনই মর্মান্তিক দুরবস্থার ছবি ধরা পড়লো পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাদুড়িয়ার চাতরা গ্ৰাম পঞ্চায়েতে।
পশ্চিমবঙ্গে বেশ কয়েকদিন ধরে চলছে টানা বৃষ্টি। আর এই একনাগাড়ে বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট সাব-ডিভিশনের চাতরা গ্ৰাম পঞ্চায়েতে অন্তর্গত প্রায় সব গ্রামের বসতবাড়ি, চাষের জমি, রাস্তা-ঘাট পানির তলায়। এমনকি, অভিভাবকদের কাঁধে করে স্কুলে পৌঁছাতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। নষ্ট হচ্ছে চাষের জমির ফসল। ডাঙ্গার খোঁজে বিষধর সাপ ও পোকামাকড় ঢুকে পড়ছে বাড়িতে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা।
এই পরিস্থিতিতে চাতরা গ্রাম পঞ্চায়েতের কোটালবাড়ি গ্ৰামের বাসিন্দা নরুল শেখ বেশ কিছুদিন ধরে শারিরীক অসুস্থায় ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) হঠাৎ করে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। নুরুলের পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে খবর দেয়। কিন্তু তার গ্রামে কোমর পর্যন্ত বর্ষার পনি জমে থাকায় অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে পারে না। ফলে কলা গাছ দিয়ে বানানো ভেলাতে শুইয়েই নরুলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রত্যেক বছর বর্ষার সময় দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের। বারবার জানানো হলেও কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। স্থানীয় পঞ্চায়েত বা বিধায়ক কারো কাছ থেকেই মিলছে না স্থায়ী সমাধান।
যদিও চাত্ররা পঞ্চায়েতের প্রধান আসলাম উদ্দিন জানিয়েছেন, পদ্মা নদীর খাল, যমুনা, ইছামতি নদীতে পলি জমে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। ফলে বর্ষার পানি নদীতে না গিয়ে গ্ৰামে জমা হচ্ছে।তা এই পরিস্থিতিত তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে ইছামতি নদীর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এরপর পদ্মা নদীর খাল ও যমুনার সংস্কার শুরু হবে। তখন সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে বলে আমরা আশা করছি।
ডিডি/এসএএইচ