ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যে স্টুডেন্ট ভিসা: পড়াশোনার সঙ্গে মোটা বেতনে চাকরির সুযোগ

খান আরাফাত আলী | প্রকাশিত: ০৩:০৭ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাজ্যে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যেতে পারলে পড়াশোনার সঙ্গে মোটা বেতনে চাকরির সুযোগ পাওয়া যায়। অর্থাৎ উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি বৈধভাবে আয় করার সুবর্ণ সুযোগ মিলবে দেশটিতে। ফলে শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন খরচ সামলাতে পারবেন, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে গড়ে তুলতে পারবেন কর্মজীবনও।

যুক্তরাজ্যে স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া ও খরচ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক

স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা

  • বয়স কমপক্ষে ১৬ বছর হতে হবে।
  • লাইসেন্সধারী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ভর্তি অফার থাকতে হবে।
  • পড়াশোনার খরচ ও জীবিকা নির্বাহের মতো যথেষ্ট অর্থ থাকতে হবে।
  • ইংরেজি পড়তে, লিখতে, বলতে ও বুঝতে সক্ষম হতে হবে।
  • বয়স যদি ১৬ বা ১৭ হয়, তবে পিতা-মাতার লিখিত সম্মতি দেখাতে হবে।
  • স্বাধীন স্কুলে পড়াশোনার ক্ষেত্রে ১৬–১৭ বছর বয়সীদের জন্য চাইল্ড স্টুডেন্ট ভিসা প্রযোজ্য।
  • এই ভিসা আগের Tier 4 (General) Student Visa-এর পরিবর্তে চালু হয়েছে।

আবেদনের সময়সীমা

  • যুক্তরাজ্যের বাইরে থেকে: কোর্স শুরুর ৬ মাস আগে থেকে আবেদন করা যায়।
  • যুক্তরাজ্যের ভেতরে থেকে: কোর্স শুরুর ৩ মাস আগে থেকে আবেদন করা যায়।
  • নতুন কোর্স অবশ্যই আগের ভিসা শেষ হওয়ার ২৮ দিনের মধ্যে শুরু হতে হবে।

ভিসা অনুমোদনের সময়

  • বাইরে থেকে আবেদন করলে সাধারণত তিন সপ্তাহে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়।
  • ভেতরে থেকে আবেদন করলে সাধারণত আট সপ্তাহে সিদ্ধান্ত আসে।
  • অতিরিক্ত ফি দিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।

যুক্তরাজ্যে থাকার সময়সীমা

  • ডিগ্রি পর্যায়ের কোর্সে (বয়স ১৮+) সর্বোচ্চ পাঁচ বছর।
  • ডিগ্রির নিচের কোর্সে সর্বোচ্চ দুই বছর।

ভিসার মেয়াদ বাড়ানো বা পরিবর্তনের সুযোগ

  • পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাইলে ভিসার মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব।
  • অন্য ভিসা থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় রূপান্তর করা যায়।
  • কোর্স শেষে কমপক্ষে দুই বছরের জন্য গ্র্যাজুয়েট ভিসায় পরিবর্তন সম্ভব।

যুক্তরাজ্যে প্রবেশের সময়সীমা

  • কোর্সের মেয়াদ ছয় মাস বা তার কম হলে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ আগে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেন।
  • কোর্স ছয় মাসের বেশি হলে সর্বোচ্চ এক মাস আগে প্রবেশ করতে পারবেন।
    ভিসায় উল্লেখিত তারিখের আগে প্রবেশ করা যাবে না।

ভিসা আবেদন ফি

  • যুক্তরাজ্যের বাইরে থেকে আবেদন করলে ৫২৪ পাউন্ড।
  • ভেতরে থেকে আবেদন (ভিসার মেয়াদ বাড়ানো বা পরিবর্তন) ৫২৪ পাউন্ড।
  • পরিবারের প্রতি সদস্যের জন্য আলাদা ফি দিতে হবে।

হেলথকেয়ার সারচার্জ

  • ভিসার মেয়াদ অনুসারে স্বাস্থ্যসেবা সারচার্জ (আইএইচএস) দিতে হবে।

পরিবার নিয়ে যাওয়ার সুযোগ

  • নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানদের (ডিপেন্ডেন্ট) সঙ্গে নেওয়া সম্ভব।

কী করা যাবে

  • পড়াশোনার পাশাপাশি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাব্বাটিক্যাল অফিসার হিসেবে কাজ করা যাবে।
  • নির্দিষ্ট শর্তে পার্ট-টাইম চাকরি করার সুযোগ আছে।

কী করা যাবে না

  • সরকারি ভাতা বা পেনশন নেওয়া যাবে না।
  • পেশাদার খেলোয়াড়/কোচ হিসেবে কাজ করা যাবে না।
  • স্বনির্ভর (self-employed) হওয়া যাবে না।
  • একাডেমি বা স্থানীয় সরকারি অর্থায়িত স্কুলে পড়াশোনা করা যাবে না।

কোর্সের শর্ত

  • অবশ্যই লাইসেন্সধারী স্পন্সর প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে।
  • ভর্তির পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে Confirmation of Acceptance for Studies (সিএএস) নম্বর দেওয়া হবে, যা ভিসা আবেদনে যুক্ত করতে হবে।
  • সিএএস পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

আর্থিক শর্ত

  • কোর্স ফি ও জীবিকা নির্বাহের খরচ দেখাতে হবে।
  • লন্ডনে পড়াশোনার ক্ষেত্রে মাসে ১ হাজার ৪৮৩ পাউন্ড (সর্বোচ্চ ৯ মাস পর্যন্ত)।
  • লন্ডনের বাইরে পড়াশোনার ক্ষেত্রে মাসে ১ হাজার ১৩৬ পাউন্ড (সর্বোচ্চ ৯ মাস পর্যন্ত)।
  • বোর্ডিং স্কুলের ক্ষেত্রে বোর্ডিং ফি আলাদাভাবে সিএএস-এ উল্লেখ থাকবে।
  • ব্যাংক অ্যকাউন্টে ন্যূনতম ২৮ দিন টাকা থাকতে হবে, আবেদন করার ৩১ দিনের মধ্যে সেই সময়সীমা শেষ হতে হবে।

যে ক্ষেত্রে আর্থিক প্রমাণ দেখাতে হবে না

  • গত ১২ মাস ধরে বৈধ ভিসায় যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলে।
  • স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাব্বাটিক্যাল অফিসার হিসেবে আবেদন করলে।
  • কিছু নির্দিষ্ট দেশের নাগরিক হলে (যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি)।

প্রয়োজনীয় নথি

  • বৈধ পাসপোর্ট/ভ্রমণ নথি।
  • সিএএস নম্বর।
  • পর্যাপ্ত অর্থের প্রমাণ (যদি প্রয়োজন হয়)।
  • নির্দিষ্ট কোর্স ও জাতীয়তার ক্ষেত্রে এটিএএস (Academic Technology Approval Scheme) সনদ।
  • ১৮ বছরের নিচে হলে পিতা-মাতার লিখিত সম্মতি ও সম্পর্ক প্রমাণের নথি।
  • যক্ষ্মা (টিবি) পরীক্ষার রিপোর্ট।
  • আর্থিক স্পনসর থাকলে তাদের লিখিত সম্মতি।

পরামর্শ

ভিসার নিয়ম এবং ফির পরিমাণ যে কোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। তাই অবশ্যই যুক্তরাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে (gov.uk) সর্বশেষ তথ্য দেখে নিন।

সূত্র: যুক্তরাজ্য সরকার
কেএএ/