ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

রয়েছে বড় চ্যালেঞ্জও

সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় মুম্বাইয়ে নতুন বিমানবন্দর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৪:৪৬ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ে অবতরণ করা প্রথমবারের ভ্রমণকারীদের জন্য একটি আলাদা অভিজ্ঞতা হতে পারে। কারণ প্লেন যখন আরব সাগর পেরিয়ে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও এশিয়ার সবচেয়ে বড় বস্তি অঞ্চল পেরিয়ে শহরের দিকে এগোয় তখন একদিকে চোখে পড়ে উঁচু ভবন আর অন্যদিকে জালের মতো রেললাইন।

এই জনাকীর্ণ শহরের মাঝখানে একটি ব্যস্ততম বিমানবন্দর পরিচালনা করাকে অনেকদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ ও অকার্যকর বলে মনে করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।

কিন্তু অনেক বিলম্ব ও বাধার পর নাভি মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখন উদ্বোধনের প্রস্তুতিতে এবং আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরেটর সংস্থা আদানি এয়ারপোর্ট হোল্ডিংস-এর সিইও অরুণ বানসাল জানিয়েছেন, নতুন বিমানবন্দরটি মুম্বাইয়ের যাত্রী চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমাবে।

তিনি বলেন, বর্তমান বিমানবন্দর বছরে ৫.৫ কোটি যাত্রী ধারণ ক্ষমতা পূর্ণ করে ফেলেছে। নতুন করে আরও ২ কোটি যাত্রীর চাহিদা রয়েছে, যা নতুন বিমানবন্দর পূরণ করতে পারবে।

প্রায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর জায়গাজুড়ে নির্মিত নতুন বিমানবন্দরটি মুম্বাই শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভারতের দীর্ঘতম সমুদ্রসেতুর মাধ্যমে এটি শহরের সঙ্গে সংযুক্ত। এতে রয়েছে দুটি সমান্তরাল রানওয়ে, যা ধাপে ধাপে সম্প্রসারণের মাধ্যমে বছরে ৯ কোটি যাত্রী সেবা দিতে পারবে।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিশ্লেষক শুকোর ইউসুফ বলেন, মুম্বাই হবে ভারতের প্রথম বড় শহর, যেখানে দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু থাকবে।

গত কয়েক বছরে ভারতের এভিয়েশন খাত দ্রুত বেড়েছে। এরই মধ্যে দেশটির এয়ারলাইনগুলো প্রায় ১ হাজার ৯০০ নতুন প্লেন অর্ডার করেছে, যার মধ্যে ১ হাজার আগামী পাঁচ বছরে এসে যাবে। এই কারণে নাভি মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অবকাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আদানি গ্রুপ বলছে, নাভি মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হবে ভারতের প্রথম পুরোপুরি ডিজিটাল বিমানবন্দর। চেক-ইন, নিরাপত্তা, ব্যাগেজ ও বোর্ডিংয়ের সময় অনেক কমবে এবং যাত্রীরা সহজেই সংযোগ ফ্লাইট নিতে পারবেন।

এরই মধ্যে ইন্ডিগো ও আকাসা এয়ার এখানে নতুন রুট চালু করছে। এয়ার ইন্ডিয়া ১৫টি শহরে ফ্লাইট চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যেগুলোর মধ্যে কিছু আন্তর্জাতিক রুটও থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানবন্দরটি শহর থেকে অনেক দূরে হওয়ায় যাত্রীদের জন্য এটি ভোগান্তির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে যারা সংযোগ ফ্লাইট ধরতে চান, তাদের দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে।

একটি সরাসরি মেট্রো রুট তৈরির কাজ চলছে, যা মাত্র ২০ মিনিটে পুরোনো ও নতুন বিমানবন্দরকে যুক্ত করবে, তবে এটি কয়েক বছর পরেই চালু হবে। আপাতত ইলেকট্রিক বাস চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।

নতুন বিমানবন্দর চালু হলেও, মুম্বাই কি সিঙ্গাপুর বা দুবাইয়ের মতো একটি বৈশ্বিক হাব হয়ে উঠতে পারবে?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতকে নীতিগত ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু বাধা কাটিয়ে উঠতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, অভ্যন্তরীণ থেকে আন্তর্জাতিক টার্মিনালে যাওয়ার সময় আবার নিরাপত্তা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় – যা অধিকাংশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দরকার হয় না।

এছাড়াও, শরীর স্ক্যানারের পরিবর্তে এখনও দেশে হাতের স্পর্শে তল্লাশি করা হয়, যা সময়সাপেক্ষ।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুম্বাইয়ের কৌশলগত অবস্থান – ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকার মাঝামাঝি। সুযোগ কাজে লাগাতে হলে বিমান সংস্থাগুলোকে আরও আন্তর্জাতিক রুট চালু করতে হবে এবং দীর্ঘপথের বিমান পরিচালনার পরিকল্পনা গুছিয়ে নিতে হবে।

সূত্র: বিবিসি

এমএসএম