ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের পাল্টাপাল্টি বন্দর ফিতে নতুন অস্থিরতার আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৭:১১ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন আবারও মুখোমুখি। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) থেকে দুই দেশই একে অপরের জাহাজে অতিরিক্ত বন্দর ফি আরোপ করেছে, যা বৈশ্বিক নৌপরিবহন ও বাণিজ্যে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।

এই ফি-এর আওতায় পড়ছে ছুটির খেলনা থেকে শুরু করে অপরিশোধিত তেল পর্যন্ত—সব ধরনের পণ্যবাহী জাহাজ।

গত সপ্তাহে চীন বিরল খনিজ রপ্তানিতে বড় ধরনের নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, তিনি চীনা পণ্যের ওপর শতকরা ১০০ ভাগ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করবেন।

এর পর দুই পক্ষই কিছুটা সংযম দেখালেও এখন মনে হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যযুদ্ধ ফের শুরু হতে যাচ্ছে।

চীন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন, পরিচালিত, নির্মিত বা মার্কিন পতাকাবাহী জাহাজগুলোকে নতুন এই বিশেষ বন্দর ফি দিতে হবে। তবে চীনে নির্মিত জাহাজগুলো এই ফি থেকে অব্যাহতি পাবে।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভি প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, এই ফি জাহাজের প্রথম বন্দরে প্রবেশের সময় বা বছরে সর্বোচ্চ পাঁচবার পর্যন্ত আদায় করা হবে।

এর আগে এ বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছিল যে, চীনা সংযোগযুক্ত জাহাজগুলোর ওপরও তারা বন্দর ফি আরোপ করবে। লক্ষ্য ছিল চীনের বৈশ্বিক নৌপরিবহন খাতে প্রভাব কমানো ও মার্কিন জাহাজশিল্পকে শক্তিশালী করা।

বাইডেন প্রশাসনের সময়ে পরিচালিত এক তদন্তে দেখা যায়, চীন বৈশ্বিক নৌপরিবহন ও জাহাজনির্মাণে অন্যায্য নীতি অনুসরণ করছে—যার ভিত্তিতে নতুন ফি আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত শিপিং কোম্পানি কসকো সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে। শুধু ২০২৬ সালেই এই ফি বাবদ প্রতিষ্ঠানটির ৩.২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে, ভুল পদক্ষেপ সংশোধন করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজুন। যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত বেছে নিলে চীনও শেষ পর্যন্ত তা মোকাবিলা করবে; আর সংলাপ চাইলে, চীনের দরজা খোলা রয়েছে।

আথেন্সভিত্তিক এক্সক্লুসিভ শিপব্রোকারস এক প্রতিবেদনে বলেছে, এই পাল্টাপাল্টি বন্দর ফি দুই অর্থনীতিকে এমন এক কর-চক্রে আবদ্ধ করছে, যা বৈশ্বিক নৌবাণিজ্য প্রবাহকে বিকৃত করতে পারে।

শাংহাইয়ের এক বাণিজ্য বিশ্লেষক বলেন, খরচ কিছুটা বাড়লেও বাণিজ্য পুরোপুরি থেমে যাবে না। কোম্পানিগুলো এরই মধ্যে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে।

ক্লার্কসনস রিসার্চ জানিয়েছে, নতুন ফি বৈশ্বিক তেলবাহী ট্যাংকারের ১৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রভাবিত করতে পারে।

জেফিরিজ বিশ্লেষক ওমর নোকতা অনুমান করছেন, এই নীতিতে বৈশ্বিক বহরের ১৩ শতাংশ ক্রুড ট্যাংকার ও ১১ শতাংশ কনটেইনার জাহাজ ক্ষতির মুখে পড়বে।

সূত্র: রয়টার্স

এমএসএম