ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

ধূমপান, চাটুকারিতা, কূটনীতি

গাজা শান্তি সম্মেলনকে ‘নাটকে’ পরিণত করলেন ট্রাম্প-এরদোয়ান-মেলোনিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৭:৪৯ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে মিশরে অনুষ্ঠিত গত সোমবারের আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে নজর ছিল সারাবিশ্বের। কিন্তু ট্রাম্প-এরদোয়ান-মেলোনিদের কারণে সেই সম্মেলন যেন পরিণত হলো ভূমধ্যসাগরীয় রিয়েলিটি শো ‘লাভ আইল্যান্ড: লিডারস এডিশন’-এ।

আলোচনার টেবিলে সহকারীরা যখন যুদ্ধবিরতির খসড়া তৈরি করছিলেন, তখন আসল নাটক চলছিল ব্যাকগ্রাউন্ডে—এরদোয়ান নৈতিক উপদেশ দিচ্ছেন, ট্রাম্প সৌজন্যবোধ দেখিয়ে আলো কাড়ছেন, আর ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ঝড় তুলছেন সিগারেটের ধোঁয়ায়।

এরদোয়ানের ধূমপানবিরোধী অভিযান

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান মেলোনিকে সিগারেট হাতে দেখে যেন সুযোগ হাতছাড়া করলেন না। তাৎক্ষণিকভাবে বললেন, ‘আপনাকে দারুণ দেখাচ্ছে, কিন্তু ধূমপান ছাড়তে হবে।’ যেন কোনো ধূমপানবিরোধী সম্মেলনে এসেছেন তিনি।

আরও পড়ুন>>
ঝুঁকি নিয়ে মেলোনিকে ‘সুন্দরী’ বললেন ট্রাম্প
ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনিকে ধূমপান ছাড়তে বললেন এরদোয়ান
মিশরে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গাজা শান্তিচুক্তিতে সই করলেন ট্রাম্প
কেউ ভাবেনি গাজায় যুদ্ধবিরতি সম্ভব: ট্রাম্প

এরই মধ্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ মজার ছলে মন্তব্য করলেন, ‘অসম্ভব!’ মেলোনি ঠান্ডা মাথায় উত্তর দিলেন, ‘জানি, কিন্তু যদি ছেড়ে দেই, কারও ক্ষতি করে ফেলবো।’

এই এক কথায় হাসিতে ফেটে পড়লেন কূটনীতিকেরা। নারীবাদীরা প্রশংসা করলেন, আর ধূমপানবিরোধী সংগঠনগুলো একরকম নিশ্বাস আটকালো। এরদোয়ানের এই মিশন শেষ পর্যন্ত থামলো এমন এক নারীর কাছে, যিনি যেমন ইতালিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তেমনি ধূমপানের ফাঁকে কূটনীতির ভারও সামলাচ্ছেন।

ট্রাম্পের ট্রাম্পীয় কাণ্ড

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিলেন নিজের স্বাভাবিক ছন্দে, যুদ্ধ থামানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তকে রূপ দিলেন আলোচনার বাইরে থাকা শিরোনামে।

গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে হঠাৎ বললেন, ‘আমার এটা বলা উচিত না, কারণ এতে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়, কিন্তু উনি (মেলোনি) সত্যিই একজন সুন্দরী তরুণী।’

শ্রোতারা কেউ হতবাক, কেউ মুচকি হাসলেন। ট্রাম্প তখন আত্মতৃপ্ত ভঙ্গিতে যোগ করলেন, আমেরিকায় ‘সুন্দরী’ বললে সেটা অপরাধ হয়ে যায়—কিন্তু আমি ঝুঁকি নেবো।

মেলোনি সামান্য বিব্রত হলেও শালীন হাসিতে সামাল দিলেন পরিস্থিতি।

পরে ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে মেলোনির নতুন বই ‘আই অ্যাম জর্জিয়া’র প্রশংসা করে বলেন, ‘তিনি অসাধারণ এবং সবার জন্য অনুপ্রেরণা।’ মেলোনিও ইনস্টাগ্রামে ধন্যবাদ জানিয়ে কূটনৈতিক সৌজন্য রক্ষা করেন।

শান্তি আলোচনার আড়ালে নাটক

সম্মেলনের শেষে গাজা যুদ্ধবিরতির পথে গেলেও আরেকটা গল্প ছড়িয়ে পড়লো—এরদোয়ান চাইলেন মেলোনি ধূমপান ছাড়ুক, ট্রাম্প চাইলেন তিনি হাসতে থাকুন, আর ম্যাক্রোঁ চাইলেন সবাই বুঝুক যে, তিনি এখনো সবচেয়ে রসিক নেতা!

 কেএএ/