মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতিবেদনকে হাস্যকর বলেছে- এইচআরডব্লিউ
রাখাইনে নৃশংস সহিংসতার ঘটনায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তদন্ত প্রতিবেদনের কড়া সমালোচনা করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার ঘটনায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ এ তদন্ত প্রতিবেদনকে মঙ্গলবার ‘হোয়াইট ওয়াশ’ বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
অপরদিকে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই প্রতিবেদনকে ‘হাস্যকর’ বলে দাবি করেছে। দেশটিতে জাতিসংঘসহ অন্যান্য নিরপেক্ষ তদন্তকারীদের প্রবেশে অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।
গত আগস্টের শেষের দিকে রোহিঙ্গাবিরোধী মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনে রাখাইনে এখন পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়েছে। জাতিসংঘের শীর্ষ এক কর্মকর্তা রাখাইনের এ ঘটনাকে জাতিগত নিধনের বিশেষ ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন।
রোববার জাতিসংঘের অপর এক কর্মকর্তা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ গণধর্ষণ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেছেন তিনি।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী সোমবার এক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল মিং অং হ্লেইংয়ের ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে রাখাইনে কোনো ধরনের নৃশংসতার সঙ্গে সেনা সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে নির্দোষ দাবি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা গ্রামবাসীদের গুলি চালিয়ে হত্যা, ধর্ষণ অথবা বন্দিদের নিপীড়নের অভিযোগের কোনো প্রমাণ পায়নি সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গা গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেয়া অথবা অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগও অস্বীকার করা হয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, সেনা অভিযানে ৩৭৬ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে কোনো নিষ্পাপ মানুষের প্রাণহানি ঘটেনি। এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, বার্মিজ সেনাবাহিনীর ‘হাস্যকর’ এ তদন্ত প্রতিবেদন বুঝিয়ে দিচ্ছে দায়ীদের শনাক্ত করতে কেন আন্তর্জাতিক স্বাধীন তদন্ত প্রয়োজন।
মিয়ানমারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে বুধবার দেশটিতে সফরে যাবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। তার এ সফরের মাত্র দু’দিন আগে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীন এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এর আগে সোমবার ম্যানিলায় আসিয়ানের সম্মেলনে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন টিলারসন। সম্মেলনে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরাসের সঙ্গে আলোচনা করেছেন সু চি। এসময় রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত নিতে আবারও সু চির প্রতি আহ্বান জানান গুতেরাস।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও সেনাবাহিনীর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপে মার্কিন সিনেটররা ওয়াশিংটনে চাপ তৈরি করেছেন। মিয়ানমার সফরে এসে টিলারসন দেশটির সেনাপ্রধানকে কঠোর বার্তা দিতে পারেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি।
এসআইএস/এমএস
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক
- ১ বাবরি মসজিদে প্রথম আঘাতকারী ব্যক্তির জীবনে কী ঘটেছিল?
- ২ কঠোর হলো অভিবাসন নীতি, ইউরোপ না ছাড়লে হতে পারে দীর্ঘ সময়ের জেল
- ৩ জিন্নাহকে সমর্থন জানিয়ে ‘বন্দে মাতরম’ এর বিরোধিতা করেছিলেন নেহরু: মোদী
- ৪ নাইজেরিয়ায় অপহৃত ১০০ শিশু উদ্ধার, এখনো নিখোঁজ ১৬৫
- ৫ ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ ২০২৬, বাংলাদেশ থেকে আবেদন করবেন যেভাবে