ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

সারাদেশে অরক্ষিত ম্যানহোল-ড্রেন কতটি জানতে চান হাইকোর্ট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:১৩ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সারাদেশে কতগুলো অরক্ষিত ম্যানহোল, ড্রেন ও স্যুয়ারেজ লাইন আছে তার তালিকা আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রস্তুত করে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৭ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। ওইদিনই শুনানির জন্য দিন ধার্য করে দিয়েছেন আদালত।

একই সঙ্গে গাজীপুরের টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাস্পাতালের সামনে খোলা ম্যানহোলে পড়ে নিহত ফারিয়া তাসনিম জ্যোতির দুই শিশু সন্তানসহ পরিবারকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না- এই মর্মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গাজীপুর সিটি করপোরেশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের চেয়ারম্যান, মনি ট্রেডিং করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইয়াছিন আলফাজ আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গাজীপুরের টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় ড্রেনে পড়ে নিখোঁজ নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গাফিলতি খতিয়ে দেখতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়। রিটে গাজীপুর মহানগরী বা সিটি করপোরেশনে কতগুলো স্যুয়ারেজ, ম্যানহোল, ড্রেন ও নলকূপ খোলা অবস্থায় আছে তার তালিকা দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অরক্ষিত ড্রেন এবং ম্যানহোলে পড়ে গেলে বা দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের কী কী আধুনিক সরঞ্জামাদি আছে তার তথ্যও চাওয়া হয় রিটে।

এছাড়াও ম্যানহোলে পড়ে নিহত ফারিয়া তাসনিম জ্যোতির পরিবারকে কেন ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না- এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয় রিটে। এতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের চেয়ারম্যান, মনি ট্রেডিং করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে রেসপন্ডেন করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজিমুদ্দিন পাটোয়ারী, অ্যাডভোকেট নাদিম মাহমুদ, অ্যাডভোকেট ইয়াছিন আলফাজ, অ্যাডভোকেট মো. শফিকুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট রবি হোসেন গত ৩ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন।

ঘটনার তিনদিন পর গত ২৯ জুলাই সকাল ৯টার দিকে টঙ্গীর শালিকচূড়া বিল থেকে ফারিয়া তাসনিম ওরফে জ্যোতির (৩২) মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। ওইদিন টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা শাহিন আলম বলেন, ফারিয়া তাসনিম যে ড্রেনে পড়েছিলেন, সেই ড্রেনের পানি শালিকচূড়া বিলে গিয়ে পড়ে। সকালে সেখানে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

ফারিয়া তাসনিম চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার বাগানপাড়া এলাকার ওয়াসিম উল্লাহ আহমেদের মেয়ে। তিনি টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকার ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ওষুধ বিপণনের কাজে এসেছিলেন। একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সামনের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে একটি ড্রেনের অংশে দীর্ঘদিন ধরে কোনো ঢাকনা ছিল না। ছিল না কোনো সতর্কতামূলক সাইনবোর্ডও।

গত ২৭ জুলাই রাতে হেঁটে যাওয়ার সময় অসাবধানতাবশত ফারিয়া তাসনিম ওই খোলা ড্রেনে পড়ে যান। পানির প্রবল স্রোতে তিনি নিখোঁজ হন। দুর্ঘটনার পরপরই গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনের কর্মীরা যৌথ উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। অবশেষে ২৯ জুলাই সকালে শালিকচূড়া বিল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করেন, সিটি করপোরেশন ও বিআরটি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। তারা বলেন, এমন ব্যস্ত এলাকায় খোলা ড্রেন রেখে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

নিহত নারীর বড় ভাই মো. শোভন বলেন, বোনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বিভিন্নভাবে খোঁজ করতে থাকি। একপর্যায়ে ২৮ জুলাই সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে বোনের ব্যবহৃত জুতা পেয়ে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হই।

এফএইচ/কেএসআর/এএসএম