ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষীকে জেরা
দ্বিতীয় মেয়াদে আইজিপি হওয়ায় আগ্রহ ছিল না মামুনের
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন/ ফাইল ছবি
২০২৪ সালের জুলাই মাসে যখন দ্বিতীয়বারের মতো পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছিল, তাতে তিনি আগ্রহী ছিলেন না। এই অনাগ্রহের কথা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিবকে জানিয়েছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেলে রাজসাক্ষী হিসেবে জেরায় মামুন এসব তথ্য দেন। ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে এই মামলায় মামুনও ছিলেন আসামি, কিন্তু তিনি রাজসাক্ষী হয়ে সরকারের ভেতরকার তথ্য দিয়ে মামলার বিচারে সহায়তা করছেন।
ট্রাইব্যুনালে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে জেরা করেন মামলার পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে (স্টেট ডিফেন্স) নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। জেরার পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য আগামী সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দিন ঠিক করেছেন আদালত।
জেরায় আইনজীবী মো. আমির হোসেন বলেন, সে সময় গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক গ্রুপিংয়ের কারণে তাকে (চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন) আইজিপি হিসেবে এক্সটেনশন (মেয়াদ বৃদ্ধি) দেওয়ার কথা তিনি জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, যা অসত্য। জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, তিনি জবানবন্দিতে এ বিষয়ে সত্য কথা বলেছেন।
আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক গ্রুপিংয়ের জন্য নয়, তিনি (চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন) তদবির করে নিজের স্বার্থে এক্সটেনশন নিয়েছেন। জবাবে মামুন বলেন, এ কথা সত্য নয়। এরপর আইনজীবী বলেন, “এক্সটেনশন নেওয়ার সময় ‘না’ করেছেন? জবাবে মামুন বলেন, তিনি প্রথম এক্সটেনশনে রাজি হয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয়বার এক্সটেনশনের সময় তিনি আগ্রহী ছিলেন না।”
এরপর আইনজীবী আবার প্রশ্ন করেন, তিনি যে আগ্রহী ছিলেন না, এ কথা কাকে বলেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে তার অনাগ্রহের কথা মৌখিকভাবে জানান। এ সময় আইনজীবী আমির হোসেন জানতে চান, এ কথা (মুখ্য সচিবকে জানানো) মিথ্যা। তখন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জানান বলেছি, সত্য।
২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আইজিপির দায়িত্ব নেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। চাকরির স্বাভাবিক মেয়াদ অনুযায়ী ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই বছরের ১২ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তাকে চুক্তিভিত্তিক আইজিপি নিয়োগ দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। পরে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তার চাকরির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছিল।
এফএইচ/এমএমকে/জেআইএম