ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ভাঙ্গা থেকে দুই ইউনিয়ন বাদ দেওয়া কেন অবৈধ নয়, হাইকোর্টের রুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:১১ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলা থেকে দুই ইউনিয়ন বাদ দিয়ে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণী আইন ২০২১-এর ৭ ধারা এবং বাংলাদেশ সংবিধানের ১২৫(ক) অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশন, আইন সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব। তিনি জানান, আদালত রুল দিয়েছেন। সংবিধানের ১২৫(ক) অনুচ্ছেদ, জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণী আইনের ধারা ৭ ও গেজেট বিষয়ে রুল দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন গত ৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে গেজেট বা প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসন থেকে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে বাদ দিয়ে সেগুলোকে ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা) আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট বাতিল করার জন্য আইনি নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নোটিশের পরও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় হাইকোর্টে রিট করা হয়। গেজেট চ্যালেঞ্জ করে গত ৯ সেপ্টেম্বর রিটটি করেন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. শহিদুল ইসলাম বাবুল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহবুবুর রহমান দুলালসহ পাঁচজন।

রিটকারীদের আইনজীবী হুমায়ুন বলেন, নির্বাচন কমিশন আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য আসনের চূড়ান্ত সীমানা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে চরভদ্রাসন, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলার একটি অংশকে নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসনের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। একইসঙ্গে ভাঙ্গা উপজেলা থেকে দুটি ইউনিয়নকে বিচ্ছিন্ন করে পাশের সংসদীয় আসন ফরিদপুর-২-এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।

তাই কমিশনের প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করা হয় জানিয়ে হুমায়ুন বলেন, একইসঙ্গে জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণী আইন ২০২১-এর ৭ ধারা এবং বাংলাদেশ সংবিধানের ১২৫(ক) অনুচ্ছেদ চ্যালেঞ্জ করা হয়। কমিশন ২০০৮ সালে সংশ্লিষ্ট আইন ভেঙে দুটি সংসদীয় আসন (ফরিদপুর-৪ এবং ফরিদপুর-৫) একত্রিত করে তিনটি উপজেলার সমন্বয়ে একটি আসন (ফরিদপুর-৪) করে। রিট আবেদনকারীরা দুটি আসন পুনর্বহালের জন্য আবেদন করলেও কমিশন তা নামঞ্জুর করে। সেই সঙ্গে অবৈধভাবে ভাঙ্গা উপজেলা থেকে দুটি ইউনিয়ন বিচ্ছিন্ন করে পাশের ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে সংযুক্ত করে, যা ২০২১ সালের সীমানা নির্ধারণী আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

হুমায়ুন জানান, নির্বাচনী আইনে কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিকারের ক্ষেত্রে আইনি বাধা রয়েছে। তাই আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা এবং মূল সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। আদালত রিটকারীদের আইনগত যুক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে রুল জারি করেছেন। কারণ একজন নাগরিককে আইনি প্রতিকার থেকে এবং সাংবিধানিক অধিকার থেকে কোনোভাবেই বঞ্চিত করার সুযোগ নেই।

রিটকারীদের এ আইনজীবী বলেন, ‘মামলাটি সাংবিধানিক আইনের উৎকর্ষ সাধনে মাইল ফলক। কারণ বাংলাদেশে ইতিপূর্বে মূল সংবিধানের কোনো অনুচ্ছেদকে চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। যদিও সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এবং বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশের সুপ্রিম কোর্ট কয়েকটি মামলায় মূল সংবিধানের বেশ কয়েকটি অনুচ্ছেদকে নাগরিকের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে বাতিল করে রায় দিয়েছেন। আশা করি চূড়ান্ত শুনানিতে বাংলাদেশের সাংবিধানিক আইনে এ মামলায় নজির সৃষ্টি হবে।’

এফএইচ/একিউএফ/এমএস