ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ট্রাইব্যুনালে অডিও রেকর্ড জমা

‘নিলিং পজিশনে গিয়ে গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৫১ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সময় জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তৎকালীন কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেছিলেন ‘আমি নির্দেশ দিয়েছি, আপনাদের স্বাধীনতা দিয়েছি, যেখানে যেমন সিচুয়েশন (পরিস্থিতি), সেভাবে... আপনারা করবেন।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আপনারা নিলিং পজিশনে গিয়ে হাঁটু গেড়ে কোমরের নিচে গুলি করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবেন।’

জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমনের বিষয়ে ওয়্যারলেস বা বেতার বার্তায় এভাবেই পুলিশের অধস্তনদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানের দেওয়া এমন নির্দেশনা সম্বলিত একটি অডিও রেকর্ড জমা দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে অডিওটি দুবার শোনানো হয়।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৫০তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন মো. কামরুল হাসান। তিনি ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে ওয়্যারলেস অপারেটর হিসেবে কর্মরত আছেন।

জবানবন্দি দেওয়ার শেষ পর্যায়ে কামরুল হাসান ট্রাইব্যুনালকে একটি অডিও রেকর্ড দেন। জবানবন্দিতে কামরুল হাসান উল্লেখ করেন, সেই অডিওতে ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, তিনি (কামরুল হাসান) এবং অন্যদের বার্তা আদান-প্রদানের কণ্ঠস্বর শোনা যায়।

জবানবন্দিতে কামরুল হাসান বলেন, গত বছরের ১৭ জুলাই তিনি ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে ওয়্যারলেস অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত তার ডিউটি ছিল। বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনের জন্য তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, যার সাংকেতিক কল সাইন ভিক্টর মাইক ওয়ানে (victor mike-1) সর্বোচ্চ বল প্রয়োগের নির্দেশ দেন। আন্দোলন দমাতে চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলি করার নির্দেশ দেন তিনি। তখন বার্তাবাহক হিসেবে তিনি (কামরুল হাসান) ও তার দল ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটে ওই বার্তা পৌঁছে দেন।

কামরুল হাসানের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৭ জুলাই সরকারি ছুটি ছিল। সেদিন আন্দোলনের কোনো কর্মসূচি ছিল না। সেদিন এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি যাতে গুলি করতে হবে। কোমরের নিচে, না ওপরে সেটা অবান্তর।

আরেকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সাক্ষী বলেছেন, ডিএমপি কমিশনার চাইনিজ রাইফেল ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু অডিওতে এরকম কিছু পাওয়া যায়নি। জবাবে মিজানুল ইসলাম বলেন, চাইনিজ রাইফেলের কথাটা উনি বলেছেন বা বলেননি, এই বিষয়টা ম্যাটার অব আর্গুমেন্ট (যুক্তিতর্কের বিষয়)। উনি বক্তব্য দিয়েছেন, তারা যখন আর্গুমেন্ট করবেন তখন বিষয়টি ফেস (মোকাবিলা) করা হবে।

এফএইচ/এমএমকে/এএসএম