পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি নির্বাচনের পর
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশবিশেষ বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদনের ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৫ মার্চ দিন ঠিক করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সে হিসেবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য এই দিন নির্ধারণ করে আদেশ দেন।
এর আগে আপিলের ওপর গত ৩ ডিসেম্বর শুনানি শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজও শুনানি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সেটি শুনানির জন্য রয়েছে।
এর আগে পৃথক দুটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশবিশেষ অসাংবিধানিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
তারও ১৪ বছর আগে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন এনেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। রায়ের ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরার পথ খুললেও কিছু জটিলতা থেকে যাচ্ছে, এই যুক্তিতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি আপিল আবেদন করা হয়েছে। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদকসহ চার ব্যক্তি একটি আপিল করেছেন। নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও আরও একটি পৃথক আপিল আবেদন করা হয়েছে।
আপিল তিনটি শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় উঠলে সুজন সম্পাদকসহ চার ব্যক্তির পক্ষে আদালতে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কারিশমা জাহান ও বিদুয়ানুল করিম। শুনানিতে হাইকোর্টের রায় ও পঞ্চদশ সংশোধনীর দিকগুলো তুলে ধরেন শরীফ ভূঁইয়া। আওয়ামী লীগ সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন এনে ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন জাতীয় সংসদে পাস করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ ওই সংশোধনীতে সংবিধানে ৫৪টি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছিল।
জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পঞ্চদশ সংশোধনীর পুরো আইন ও আইনের কয়েকটি ধারার বৈধতা নিয়ে গত বছর হাইকোর্টে আলাদা দুটি রিট আবেদন হয়।
সুজন সম্পাদকসহ পাঁচ ব্যক্তি একটি এবং নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন আরেকটি আবেদন করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তিসংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। এই দুটিসহ পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ ক, ৭ খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।
রায়ে গণভোটের বিধানসংক্রান্ত ১৪২ অনুচ্ছেদ (দ্বাদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে আনা) পুনর্বহাল করা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন সম্পূর্ণ বাতিল না করে বাকি বিধানগুলোর বিষয়ে আইন অনুসারে পরবর্তী সংসদ সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
এফএইচ/এমআইএইচএস