এসএসসি-এইচএসসির খাতা পুনর্মূল্যায়নের বিধান কেন নয়

এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের খাতা (উত্তরপত্র) পুনর্মূল্যায়নের বিধান না থাকা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, খাতা পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয় বিধান কেন প্রণয়ন করা হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্ট ২১ জনকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রুল জারির বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন অ্যাডভোকেট সিকদার মাহমুদুর রাজী।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
জনস্বার্থে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শিকদার মাহমুদুর রাজী ও আইনুন নাহার সিদ্দিকা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
আইনজীবী শিকদার মাহমুদুর রাজী বলেন, ‘বোর্ডের আইন অনুযায়ী খাতা পুনর্মূল্যায়নের কোনো সুযোগ নেই। যা করা যায় তা হলো পুনর্নিরীক্ষা। ফলে খাতার মার্কের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ থাকলেও খাতা মূল্যায়ন করার সুযোগ থাকে না। এ কারণে সে সুযোগ চেয়ে রিটটি দায়ের করা হয়।’
গত ১৪ মে এসএসসি ও এইচএসসিসহ সমমানের বোর্ড পরীক্ষায় উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ চেয়ে জনস্বার্থে রিট করেন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা ও আইনজীবী শিকদার মাহমুদুর রাজী। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারির নির্দেশনা দেন।
বিজ্ঞাপন
একটি জাতীয় দৈনিকের ‘ইংরেজি প্রথমপত্রে কম নম্বর পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন’ শীর্ষক প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে (ইংরেজি ভার্সনের একটি শাখা) ১ রোল নম্বর ছিল নাফিস সাদিক ভূঁইয়ার। বিদ্যালয়ের সব পরীক্ষায় সে ভালো ফল করত। ৬ মে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা যায় নাফিস ইংরেজি প্রথমপত্রে ৬৩ নম্বর পেয়েছে। অন্য সব বিষয়ে ‘এ প্লাস’ (৮০-র বেশি নম্বর) পেয়েছে। এমনকি গণিতে ১০০-তে ১০০ পেয়েছে। সব মিলিয়ে জিপিএ-৫ পেলেও ইংরেজি প্রথম পত্রে এত কম নম্বর পাওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই মানতে পারছে না সে। তার পরিবারেরও একই প্রশ্ন।
নাফিসের অভিভাবকরা পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শুধু সে একাই নয়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী ইংরেজি প্রথমপত্রে গড়ে ৬০ বা এর সামান্য বেশি নম্বর পেয়েছে। কেউ পেয়েছে ৬৩, কেউ ৬০ বা ৬১, কারও নম্বর ৬২, ৬৪, ৬৬। অথচ অন্যান্য বিষয়ে তাদের সবার নম্বর ন্যূনতম ৮০। শ্রেণিতে মেধাতালিকায় সবসময় ওপরের দিকে থাকত তারা। এসএসসির ফলে ইংরেজিতে কম নম্বর পাওয়ার বিষয়টি তারা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন, আইডিয়াল স্কুলের বাংলা ভার্সনের বহু শিক্ষার্থী যেখানে ইংরেজি প্রথমপত্রে ৯০-এর ওপরে নম্বর পেয়েছে, সেখানে শ্রেণিতে প্রথম দিকে থাকা ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে এত খারাপ করার কোনো কারণ থাকতে পারে না। তাদের আশঙ্কা, এসব শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র মূল্যায়নে কোনো গলদ হয়েছে। এ জন্য তারা এসব খাতা পুনর্মূল্যায়ন চান।
বিজ্ঞাপন
অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন, ইংরেজি প্রথমপত্রে মেধাবী শিক্ষার্থীরা অস্বাভাবিক কম নম্বর পাওয়ায় বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বোর্ডকে অনুরোধ করেছেন তিনি।
যদিও বোর্ডের আইনানুযায়ী, খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ নেই। পুনর্নিরীক্ষার সুযোগ আছে। এর মানে হলো, উত্তরপত্রের নম্বরে যোগ-বিয়োগে ভুল থাকলে সেটা ঠিক করা যায়।
এফএইচ/আরএস/এনডিএস/জেআইএম/এমএআর/বিএ
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার সাক্ষ্য পিছিয়ে ১৭ আগস্ট
- ২ দুদকের মামলায় সম্রাটের বিচার শুরু, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
- ৩ বিচার বিভাগের পৃথক সচিবালয় হলে আপত্তি নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
- ৪ ট্রেনে নারীদের কামরা বরাদ্দে হাইকোর্টে রুল শুনানির আদেশ রোববার
- ৫ তারেক রহমান-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানি আজ