ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

প্রধানমন্ত্রীর অবতরণস্থলে বোমা : ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:৫৩ পিএম, ২৩ মার্চ ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় হেলিকপ্টার অবতরণের স্থানে বোমা পুঁতে রাখার অভিযোগে করা মামলায় ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ -এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বিচারক বলেন, দণ্ডবিধির ১২১/৩৪/১০৯ ধারায় অপরাধের জন্য আসামিদের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো। একটি ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রকাশ্যে আসামিদের প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হলো। এভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে কর্তৃপক্ষের কোনো অসুবিধা থাকলে প্রচলিত নিয়মানুসারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হলো।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২১/৩৪/১০৯ ধারায় চরমদণ্ড প্রদান করায় দণ্ডবিধির ১২১ ক/২২২/১২৪ (ক) ধারামতে কোনো দণ্ড প্রদান করা হলো না।

jagonews24

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. আজিজুল হক ওরফে শাহনেওয়াজ, মো. লোকমান, মো. ইউসুফ ওরফে মোছহাব মোড়ল, মোছহাব হাসান ওরফে রাশু, শেখ মো. এনামুল হক, মো. মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, মো. মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশিদ, মো. রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমুল, মো. তারেক, মো. ওয়াদুদ শেখ ওরফে গাজী খান, মো. আনিসুল ইসলাম, সারোয়ার হোসেন মিয়া,
মাওলানা আমিরুল ইসলাম ওরফে জেন্নাত মুন্সী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করে গণতান্ত্রিক, বৈধ সরকার উৎখাত করার উদ্দেশ্যে কোটালিপাড়ায় বোমা পুঁতে রাখা হয়। স্বাধীনতাবিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের পর থেকে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশকে ধ্বংস করতে চায়। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর থেকে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। বারবার তাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়। হুজি, জেএমবি ও ইসলামি জঙ্গিরা এই ধরনের ঘটনার যাতে পুরনাবৃত্তি করতে না পারে সেজন্য তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ২১ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজের মাঠে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশ থেকে ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। বোমা উদ্ধার হওয়ার পরদিন ওই স্থানেই শেখ হাসিনার বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল। এ ঘটনায় কোটালিপাড়া থানার উপপরিদর্শক নূর হোসেন বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন।

jagonews24

২০০১ সালের ১৫ নভেম্বর তৎকালীন সিআইডির এএসপি আব্দুল কাহার আকন্দ মুফতি হান্নানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। বিচার চলাকালে আদালত মোট ৫০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আবদুল হান্নান এই মামলায় মূল আসামি ছিলেন। কিন্তু অন্য মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এই মামলায় তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে।

মামলার ১৪ আসামির মধ্যে মফিজুর রহমান, মাহমুদ আজহার, রাশেদুজ্জামান, তারেক হোসেন, আবদুল ওয়াদুদ মোল্লা, সারোয়ার হোসেন মোল্লা, আনিসুল ইসলাম, মাওলানা আমিরুল ইসলাম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম কারাগারে রয়েছেন।

jagonews24

পলাতক রয়েছেন আজিজুল হক, লোকমান, ইউসুফ শেখ, মো. এনামুল হক, মোছাহেব হাসান।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি দেয়া রায়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১০ আসামির সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডিত এক আসামি ও ১৪ বছর করে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির মধ্যে একজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ -এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

জেএ/এমএইচআর/জেআইএম