জজ মিয়ার ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রিটের আদেশ আজ
ফাইল ছবি
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ‘জজ মিয়া’ সাজিয়ে কারাবাসে রাখা মো. জালাল ওরফে জজ মিয়াকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের বিষয়ে আদেশ দেবেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে সোমবার (২৪ অক্টোবর) এ রিটের বিষয়ে শুনানি শেষ হয়। এরপর আদেশ দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ রায়।
রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ রায়।
এর আগে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। রিটে জজ মিয়াকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়।
এছাড়া গ্রেনেড হামলায় জজ মিয়াকে যারা জড়িয়েছেন, তাদের খুঁজে বের করতে আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর কারাগারে থাকায় জজ মিয়ার আর্থিক ও সামাজিক কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নির্ধারণে তদন্তের নির্দেশও চাওয়া হয়েছে।
রিটে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক আইজিপি খোদাবক্স চৌধুরী, সাবেক এএসপি আব্দুর রশিদ, মুন্সি আতিকুর রহমান, সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিনসহ গ্রেনেড হামলায় জড়িতদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তা থেকে এই ক্ষতিপূরণ আদায় করার কথা বলা হয়েছে।
বিবাদী করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিআইডি, সাবেক আইজিপি খোদাবক্স চৌধুরী, ঢাকার জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ হেড কোয়ার্টারের সাবেক স্পেশাল পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমীন, সাবেক এসপি আব্দুর রশিদ, সাবেক এসপি মুন্সী আশিকুর রহমান, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ১১ জনকে।
এর আগে জজ মিয়াকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে ১১ আগস্ট সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। নোটিশে বিবাদীদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। পদক্ষেপ না নেওয়ায় রিটটি করা হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় ২০০৫ সালের ৯ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে ধরে আনা হয় জজ মিয়াকে। তাকে ১৭ দিন রিমান্ডে রেখে, ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে একটি সাজানো জবানবন্দি আদায় করে সিআইডি।
২০০৫ সালের ২৬ জুন আদালতে দেওয়া ওই কথিত স্বীকারোক্তিতে জজ মিয়া বলেছিলেন, পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে বড় ভাইদের নির্দেশে তিনি অন্যদের সঙ্গে গ্রেনেড হামলায় অংশ নেন। ওই বড় ভাইয়েরা হচ্ছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, জয়, মোল্লা মাসুদ ও মুকুল প্রমুখ।
পরে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে নতুন করে এই মামলার তদন্তের উদ্যোগ নেয়। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ১১ জুন এ সংক্রান্ত মামলা দুটির অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অব্যাহতি দেওয়া হয় জোট সরকারের আমলে গ্রেফতার হওয়া জজ মিয়াকে। সে সময় বিনা অপরাধে পাঁচ বছর কারাভোগ করতে হয়েছিল তাকে।
এফএইচ/জেডএইচ/জেআইএম