প্রকাশ্যে ধূমপান, যত্রতত্র থুতু ফেলা বন্ধে রিটের শুনানি ২ এপ্রিল

রাস্তাঘাট বা ফুটপাতে মূত্রত্যাগ, প্রকাশ্যে ধূমপান ও যত্রতত্র থুতু কিংবা পানের পিক ফেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২ এপ্রিল পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন। একইসঙ্গে রিটটি (স্ট্যান্ডওভার) মুলতবি রেখেছেন হাইকোর্ট।
এ সময়ের মধ্যে এ সংক্রান্ত বিষয়ে (প্রকাশ্যে ধূমপান, যত্রতত্র থুতু ফেলা মলমূত্র ত্যাগের আইন) বিদ্যমান আইন সংগ্রহ করে রিটের শুনানির দিন আদালতে জমা দেওয়ার জন্য বলেছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী ড. মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া। রিটের বিষয়টি উপস্থাপন করার পর সোমবার (২৭ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী ড. মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
এর আগে রাস্তাঘাট বা ফুটপাতে মূত্রত্যাগ, প্রকাশ্যে ধূমপান ও যত্রতত্র থুতু কিংবা পানের পিক ফেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়। গত ৯ মার্চ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (মওসুস) পক্ষ থেকে এ রিট আবেদন করা হয়। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া জনস্বার্থে এ রিট করেন।
আরও পড়ুন>> প্রকাশ্যে ধূমপান, থুতু-পানের পিক ফেলা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট
রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম, সিলেট রাজশাহীসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও বিআরটিএ চেয়ারম্যানসহ ২৩ জনকে বিবাদী করা হয়।
দেশে বিভিন্ন ধরনের আইন থাকলেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নেই বিবেচনায় নতুন আইন প্রণয়নের নির্দেশনা সংক্রান্ত রুল জারির আর্জি জানানো হয় এ রিটে।
ড. গোলাম রহমান ভূঁইয়া জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে সরকারের দপ্তরসহ দায়িত্বরত সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশ পাঠানের পরও কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এ রিট আবেদন করা হয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশ মারাত্মক বায়ুদূষণে ভুগছে। আবার এসব দূষণের কারণে যক্ষ্মাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। রাস্তায় চলতে-ফিরতে দেখা যায় মানুষ রাস্তার পাশেই প্রস্রাব করছেন, দেয়ালের আশপাশে থুতু ফেলছেন। আবার কেউ কেউ প্রকাশ্যে ধূমপান করছেন। এতে সাধারণ মানুষ চলার পথে চরম বিপত্তিতে পড়েন। প্রস্রাবের প্রকট দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে হাঁটতে হয়। কোথাও কোথাও আবার ফুটপাতের ওপরই মলত্যাগ করতে দেখা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, যারা ফুটপাতের ওপর বা রাস্তার পাশে মলমূত্র ত্যাগ করছেন, তারা কি ইচ্ছাকৃতভাবে করছেন নাকি বাধ্য হয়ে করছেন? সব মিলিয়ে এসবের সমাধান প্রয়োজন। তাই এ রিট আবেদন করা হয়েছে।
গোলাম রহমান ভূঁইয়া জানান, শুধু বাংলাদেশে নয়, অনেক দেশেই যত্রতত্র থুতু ফেললে শাস্তির বিধান রয়েছে। যেমন- সৌদি আরবে রাস্তায় থুতু ফেললে ১০০-১৫০ রিয়াল জরিমানা করা হয়। গঙ্গায় বর্জ্য বা থুতু ফেললে তিন বছর কারাদণ্ড বা ১০ হাজার রুপি জরিমানার বিধান রেখে ভারতে ২০১১ সালে আইন করা হয়। ২০১৫ সালে মুম্বাইয়ের রাস্তায় থুতু বা পানের পিক ফেলার দায়ে পাঁচ হাজার রুপি জরিমানা একং এক থেকে পাঁচদিন পর্যন্ত সরকারি দপ্তর ও রাস্তা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কারের বিধান রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের আইন এত কঠোর নয়। তবে আইন প্রয়োগে উদাসীনতা থাকায় এ বিষয়ে জনসচেতনতা তেমন একটা বাড়ছে না।
এফএইচ/এএএইচ/এমএস
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ দেশের সব আদালত চত্বরে ন্যায়কুঞ্জ হবে: বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম
- ২ নাইটিংগেলের ৫২ শিক্ষার্থীকে অন্য কলেজে মাইগ্রেশনের নির্দেশ
- ৩ নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মন্ত্রীর বক্তব্য ‘শব্দচয়নে ভুল’
- ৪ মামুনুল হকের ২ মামলায় জামিন আবেদন হাইকোর্টের কার্যতালিকা থেকে বাদ
- ৫ তাপসের বক্তব্য বিষয়ে ব্যবস্থা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন