ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ছাতকের বিপজ্জনক বর্জ্য অপসারণে হাইকোর্টের রুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৫২ পিএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে বিপজ্জনক বর্জ্য অপসারণে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি), সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ছাতক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

একই বিপজ্জনক বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে জানাতে বলেছেন আদালত।

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের দাবিতে নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে দায়ের
করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ও বিচারপতি এ.কে.এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইনজীবী মো. নাজমুল করিম জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রিট আবেদনকারীর পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ব্লাস্টের প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। তাকে সহায়তা করেন ব্লাস্টের আরেক আইনজীবী মো. নাজমুল করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট অমিত তালুকদার।

আরও পড়ুন>> বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন ঘটাতে পারে ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই

এর আগে বাংলাদেশ কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও ইউনিয়নের গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টের রেলগেট, সুহিতপুর ও নুতনবাজার এবং ছাতক পৌরসোভা ও জাউয়া বাজার এলাকা থেকে বিপজ্জনক বর্জ্য অপসারণের নির্দেশনা দিয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হয়।

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানিতে ওই এলাকার বিপজ্জনক বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না মর্মে রুল জারি করে কারণ দর্শানোর নোটিশ ইস্যু করেন আদালত। একই সঙ্গে ৪-৮ নং বিবাদীদের প্রতি ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে র্বজ্য অপসারণে গৃহীত পদক্ষপে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।

গত ১৫ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ‘ছাতক: ময়লার দুর্গন্ধে পথচারীরা অতিষ্ঠ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন হতে যায়, ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও ইউনিয়নের গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টের রেলগেট, সুহিতপুর ও নুতনবাজার এবং ছাতক পৌরসোভা ও জাউয়া বাজারের প্রবেশপথে বর্জ্য পদার্থের স্তূপ রয়েছে, যা মানুষের জন্য বিশেষত স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও জীবনের জন্য ক্ষতিকর এবং এ পরিস্থিতির কারণে প্রতিনিয়ত চরম সমস্যা ও নৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।

বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জনকল্যাণের সুরক্ষা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আইন ১৯৯৫ এর অধীনে বাংলাদেশ কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু বিধিমালাটির যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে পরিবেশের চরম বিপর্যয় ঘটছে এবং একই সঙ্গে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, শ্বাসকষ্ট এবং বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগের মতো মারাত্মক ব্যাধির প্রাদুর্ভাব ঘটছে।

এছাড়াও জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জনকল্যাণের জন্য হানিকর যেকোনো কাজ জেলা পরিষদ আইন ২০০০ এর তফসিল নং ৩ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য একটি অপরাধ।

আরও পড়ুন>> দণ্ডপ্রাপ্ত জেকেজির আরিফুল হক চৌধুরী জামিন চেম্বারে স্থগিত

সুনামগঞ্জের উপরোল্লিখিত স্থানে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আইন ১৯৯৫ এর অধীনে বাংলাদেশ কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নে বিবাদীদের বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালনে ক্রমাগত ব্যর্থতায় সংক্ষুব্ধ হয়ে আইয়ুব করম আলী (সুনামগঞ্জ) ও ব্লাস্ট জনস্বার্থ বিষয়ক এ মামলা দায়ের করে।

আবেদনকারী আইয়ুব করম আলী বলেন, নগরায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। অতীতে নগরায়ন ধারণাটি শুধুমাত্র শহরেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে এটি শহরতলি কিংবা গ্রামীণ এলাকায়ও বিস্তৃতি লাভ করছে। আর এ নগরায়ন বাস্তবায়নে নির্দিষ্ট কিছু প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়, বর্জ্য এবং যানজট সমস্যা তন্মধ্যে অন্যতম। অথচ স্থানীয় প্রশাসন এই জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যথাযথ দৃষ্টিপাত করছে না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যাগুলো মোকাবিলা করা সময়ের দাবি এবং তা করতে হবে এখনই। এসব বিষয়ে অবহেলা ভবিষ্যতে আমাদের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে।

এ মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আইনুন্নাহার সিদ্দিকা বলেন, বাংলাদেশের বেশিরভাগ আইনের প্রয়োগ না হওয়ার কারণে সেই আইনের কার্যকারিতা থাকে না এবং জনগণ আইনের সুফল হতে বঞ্চিত হয়। একইভাবে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আইন ১৯৯৫ এর অধীনে বাংলাদেশ কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ খুবই যুগোপোযোগী আইন হওয়া সত্ত্বেও সেটির সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়ায় ময়লা ও আবর্জনা সঠিকভাবে পরিষ্কার না করার কারণে পরিবেশের বিপর্যয় ও স্বাস্থ্যহানি হচ্ছে। সুতরাং আইনটির যথাযথ প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরি এবং আদালতের মাধ্যমে আমরা আইনটির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে চাই।

এফএইচ/ইএ/জিকেএস