ভূমি অপরাধ প্রতিকার আইনে প্রথম মামলা, পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

জাল দলিল তৈরি করে অন্যের সম্পত্তি নিজের বলে দাবি ও প্রচারণার অভিযোগে নতুন হওয়া ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে একটি মামলা হয়েছে। সম্প্রতি কার্যকর হওয়া ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ এ দায়েরকৃত প্রথম মামলা এটি।
বুধবার (৪ অক্টোবর) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে সালমা বেগম নামের এক নারী এ মামলা করেন। এতে মো. বশির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে আগামী ১৯ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
নতুন হওয়া ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে এটি ঢাকায় প্রথম মামলা বলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী জানিয়েছেন। সালমা বেগম ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাঘৈর গৈস্তা এলাকার বাসীন্দা।
আদালতে বাদীপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নাদিম মাহমুদ। এছাড়া মামলাটির ড্রাফটিংয়ে ও ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ এর ধারা সমূহ ব্যাখ্যায় তাকে সহযোগিতা করেছেন অ্যাডভোকেট ইয়াছিন আলফাজ, অ্যাডভোকেট আরফান মিয়া, অ্যাডভোকেট ইমরান হোসেন এবং অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে মামলার বাদী সালমা বেগমের আইনজীবী নাদিম মাহমুদ ও আরফান অ্যাডভোকেট ইয়াসিন আলফাজ জাগো নিউজকে বলেন, জাল দলিল ব্যবহার করে মালিকানা দাবির অভিযোগে নতুন হওয়া ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে ভুক্তভোগী নারী একটি মামলা দায়ের করেছেন। এটা ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আমলি আদালতের প্রথম মামলা বলে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে শুনেছেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে আগামী ১৯ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সালমা বেগম ও তার মেয়ে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাঘৈর গৈস্তা এলাকার বাসীন্দা। আসামি বশির উদ্দিন তাদের দুই মা মেয়ের সম্পত্তির মিথ্যা জাল দলিল তৈরি করে নিজের নামে মালিকানা দাবি ও প্রচার করে নামজারি করেন। পরবর্তীতে গত রোববার বিকেলে ওই সম্পত্তি জোর করে দখলের চেষ্টা করলে তারা চিৎকার কান্না কাটি করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন উপস্থিত হলে তিনি চলে যান। তবে যাওয়ার সময় তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
বিজ্ঞাপন
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাদিম মাহমুদ আরও বলেন, আসামি বশির ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ এর ৪(১)(ক)/৫(১)(ক)/৫(১)(খ)/৫(১)(ঘ) ধারা এবং প্রাণ-নাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়ায় দণ্ড বিধির ৫০৬ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
জানা গেছে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩’ পাশ করে গেজেট জারি করে সরকার। এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ আইনটির বিস্তারিত তুলে ধরেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
ওই সময় তিনি বলেন নতুন আইনে ভূমি প্রতারণা, জালিয়াতি অবৈধ দখলের মামলা ১৮০ দিন বা ৬ মাসের মধ্যে বিচার শেষ করার বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ভূমি প্রতারণা, জালিয়াতি, অবৈধ দখলের মতো ১২টি অপরাধ চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনের ফলে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ কমবে এবং জমিজমা সংক্রান্ত মামলাও অনেক কম যাবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
বিজ্ঞাপন
এফএইচ/এমআইএইচএস
বিজ্ঞাপন