সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাসান আরিফের জানাজা সম্পন্ন
অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং ভূমি উপদেষ্টা, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ. এফ. হাসান আরিফের দ্বিতীয় দফার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেন প্রাঙ্গণে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্টের বিভাগের বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও অন্যান্য আইনজীবীরা জানাজায় অংশ নেন। এরপর পরবর্তী জানাজার জন্যে তার মরদেহ বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানাজায় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন, দুদক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মোমেন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ অসংখ্য আইনজীবী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
এর আগে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বাদ এশা রাজধানীর ধানমন্ডি সাত নম্বর বায়তুল আমান মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় হাসান আরিফের। এতে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানী ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান হাসান আরিফ। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
এ এফ হাসান আরিফ ২০০১ থেকে ২০০৫ সালের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর চলতি বছরের ৮ আগস্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হন। উপদেষ্টা হাসান আরিফ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আরও পড়ুন
- উপদেষ্টা হাসান আরিফ মারা গেছেন
- উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
- হাসান আরিফের মৃত্যুতে দেশ আইনের জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হারালো
১৯৪১ সালের ১০ জুলাই হাসান আরিফ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক এবং পরবর্তী সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এলএলবি সম্পন্ন করেন।
তিনি কলকাতা হাইকোর্টে ১৯৬৭ সালে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর ঢাকায় এসে বাংলাদেশ হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন। ২০০১ থেকে ২০০৫ সালের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ, নির্মাণ সালিশ, বাণিজ্যিক সালিশ, অর্থ, ব্যাংকিং এবং সিকিউরিটিজ বিষয়, করপোরেট, বাণিজ্যিক ও ট্যাক্সেশন বিষয়, সাংবিধানিক আইন বিষয়, পাবলিক আস্বাদন, আরবিট্রেশন এবং বিকল্প বিরোধ সমাধানের অন্যান্য পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছিলেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এ সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন এ এফ হাসান আরিফ। তখন তাকে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে তাকে ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এফএইচ/এসএনআর/এমএস