ঘোস্ট কার্ল, হালকা এলোমেলো চুলের নতুন ফ্যাশন ট্রেন্ড
ঘুম থেকে উঠে আয়নায় তাকিয়ে দেখলেন-চুলে আলাদা করে কিছু করা হয়নি, তবু এক ধরনের হালকা এলোমেলো পরিপাটি ভাব। জট পাকানো নয়, আবার খুব যত্নে করা স্টাইলও নয়। ঠিক এই স্বাভাবিক অথচ স্টাইলিশ কেশসজ্জাই এখন ফ্যাশনের নতুন ট্রেন্ড। হলি-বলি-টলিউডে যাকে কেউ বলছেন ‘ঘোস্ট কার্ল’, কেউ আবার ‘ঘোস্ট ওয়েভস’।
এই চুলের বিশেষত্ব হলো-এতে কোঁকড়াভাব আছে, কিন্তু তা খুব স্পষ্ট নয়। দেখলে মনে হয় চুলে ঢেউ খেলছে, যেন হালকা বাতাসে স্বাভাবিকভাবে তৈরি হয়েছে এমন একটা লুক। অতিরিক্ত কার্ল সেট করা ঢেউ নয়, বরং সহজ স্টাইল।
সোজা চুলের ফ্যাশন এখন অনেকটাই পুরোনো। তার জায়গায় এসেছে ন্যাচারাল টেক্সচারকে তুলে ধরার প্রবণতা। মসৃণ চুলকেও নানা ভাবে আউট কার্ল বা ঢেউ খেলানো করে সাজানোর চল বেড়েছে। এই ধারার মধ্যেই আলাদা করে নজর কেড়েছে ‘ঘোস্ট কার্ল’। অনেকেই এখন এই হালকা কোঁকড়ানো, স্বাভাবিক কেশসজ্জাকেই বেছে নিচ্ছেন।
তামান্না ভাটিয়া
কেন এমন নাম
ঘোস্ট কার্ল বা ঘোস্ট ওয়েভস-নামেই বোঝা যায়, চুলে কোকাড়া বা ঢেউখেলানো থাকলেও তা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে না। মাঝে মাঝে চুলকে আবার পরিপাটি করার প্রয়োজনও পড়ে না। বরং হাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে ছড়িয়ে থাকা সেই এলোমেলো কোকাড়া চুলই এক অতিরিক্ত সৌন্দর্য যোগ করে। অযত্ন হলেও চুলে থাকে, আর এটাই এই স্টাইলের মূল ভাবনা।
নাম যা-ই হোক না কেন, হলিউডে ও বলিউডে এই কেশসজ্জা বেশ জনপ্রিয়। জেনিফার লোপেজ থেকে শুরু করে আলিয়া ভাট অনেক অভিনেত্রীকেই ঘোস্ট কার্ল স্টাইলে দেখা যায়। স্টাইলটি চুলের প্রচলিত ফ্যাশনকে পাল্টে, এলোমেলো ও প্রাকৃতিক ঢেউ খেলানো চুলের দিকে ফোকাস বাড়িয়েছে।
জেনিফার লোপেজ
জনপ্রিয়তার কারণগুলো হলো
১. কম যত্নের প্রয়োজন
একবার এই কেশসজ্জা করলে বেশি খেয়াল রাখতে হয় না। অর্থাৎ দিনে দিনে চুলে অতিরিক্ত স্টাইলিং বা ঘষামাজা করার প্রয়োজন নেই। এটি ব্যস্ত জীবনের জন্য অনেকের কাছে সুবিধাজনক।
২. যাদের পরিপাটি বজায় রাখা কঠিন
যারা চুলের নিয়মিত যত্ন বা পরিপাটি বজায় রাখতে পারছেন না, তাদের জন্য ‘ঘোস্ট কার্ল’ বা ‘ঘোস্ট ওয়েভস’ স্টাইল উপযুক্ত। হালকা এলোমেলো চুলও সুন্দর দেখায়।
৩. যে কোনো চুলের ধরনে মানিয়ে যায়
সোজা, কোঁকড়ানো বা ঢেউ খেলানো-যে কোনো ধরনের চুলেই এই স্টাইল মানানসই। তাই বিভিন্ন চুলের ধরনে এটি জনপ্রিয়।
৪. সহজে পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়
পুরোনো ফ্যাশন হোক বা সাম্প্রতিক পোশাক-এই কেশসজ্জা প্রায় সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়। ফলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সহজেই ব্যবহার করা যায়।
সাবা কামার
কীভাবে করবেন ‘ঘোস্ট কার্ল’
১. রাতে ঘুমানোর আগে চুল বেনি দিয়ে বেঁধে শুয়ে পড়ুন। সকালে উঠে চিরুনি খুব হালকা করেচুল আঁচড়িয়ে নিন। যদি জট পড়ে থাকে, অল্প সিরাম ব্যবহার করুন, যাতে চুল খসখসে না হয়।
২. গোসলের পর চুল যখন কিছুটা ভেজা থাকে, তখন বেনি বেঁধে রাখুন। কিছুক্ষণ পর খোলা হাওয়ায় চুল শুকিয়ে দিন। পরে সিরাম বা চুলের স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। আঙুল দিয়ে হালকা সমান করে নিন, তবে চিরুনি ব্যবহার করবেন না।
৩. যদি চুল খুব মসৃণ বা হালকা ঢেউ খেলানো হয়, চুলের নিচ থেকে উপরে উল্টা করে গুটিয়ে মাথার উপর ক্লিপের সাহায্যে শক্ত করে আটকান। রাতভর রাখার পর সকালে চুল খোলা অবস্থায় কোঁকড়া ভাব চোখে পড়বে। চিরুনি না ব্যবহার করে হাতের সাহায্যে চুল সামান্য সেট করুন। প্রয়োজন হলে সেটিং স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন।
সূত্র: ভোগ ইন্ডিয়া, হ্যালো ফ্যাশন, উইমেন অ্যান্ড হোম
আরও পড়ুন:
চুল পড়া বন্ধ হবে রসুন ব্যবহারে
শীতকালে চুলে খুশকি বাড়ার আগেই নিন প্রতিরোধের ব্যবস্থা
এসএকেওয়াই/