শীতে শরীর গরম রাখে যেসব খাবার
শীতে শরীর গরম রাখে যেসব খাবার, ছবি: সংগৃহীত
কনকনে শীতের দিনে শরীর উষ্ণ রাখা অনেকের জন্যই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। শুধু মোটা কাপড় পরলেই যে শীতের প্রভাব এড়ানো যায়, তা নয়। এই সময় শরীরের ভেতর থেকে তাপ তৈরি ও ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস। কিছু খাবার আছে, যা স্বাভাবিকভাবেই শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শীতজনিত অসুস্থতা থেকে সুরক্ষা দেয়।
শীতকালে খাদ্যতালিকায় এসব খাবার যুক্ত করলে উষ্ণতার পাশাপাশি পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় পুষ্টিও। চলুন জেনে নেওয়া যাক, শীতকালে উপকারী কিছু খাবার সম্পর্কে-

তুলসী ও আদা: শীতকালে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তুলসী ও আদা অত্যন্ত কার্যকর। এই দুটি উপাদানে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিভাইরাল গুণ। প্রতিদিনের রান্নায় আদা ব্যবহার করুন, পাশাপাশি আদা চা বা গরম পানিতে আদাকুচি মিশিয়ে পান করতে পারেন।

হলুদ দুধ, হলুদ চা ও মসলা চা: দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে পান করলে শরীরের ভেতর থেকে তাপ তৈরি হয় এবং ব্যথা-বেদনা কমে। হলুদ চা কিংবা মসলা চাও শীতকালে বেশ উপকারী। মসলা চা সাময়িকভাবে মেটাবলিজম বাড়িয়ে শরীরে উষ্ণতার অনুভূতি তৈরি করে এবং সকালবেলার খুসখুসে কাশি কমাতে সাহায্য করে।

মধু: সর্দি, কাশি ও ফ্লুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মধু কার্যকর। পাশাপাশি এটি শরীরের ভেতর উষ্ণতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

গুড়: আদার সঙ্গে গুড় খেলে ঠান্ডা-কাশির উপশম হয়। চায়ের সঙ্গে চিনির বদলে খেজুরের গুড় ব্যবহার করতে পারেন, যা তুলনামূলকভাবে স্বাস্থ্যকর।

স্যুপ: শীতের দিনে শরীর গরম রাখার পাশাপাশি পানিশূন্যতা এড়ানো জরুরি। স্যুপ এই দুই কাজই একসঙ্গে করে। টমেটো, গাজরসহ নানা রঙের তাজা সবজি দিয়ে তৈরি স্যুপে পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ। চাইলে ডাল, বার্লি কিংবা মুরগি দিয়েও পুষ্টিকর স্যুপ বানিয়ে খেতে পারেন।

ডিম ও মাংস: শীতকালে পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ জরুরি। ডিম সহজলভ্য ও পুষ্টিকর প্রোটিনের ভালো উৎস। খাসি বা গরুর মাংস শরীরের তাপ বাড়াতে সাহায্য করলেও অতিরিক্ত রেডমিট খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভালো।

মিষ্টি আলু: ফাইবার, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও আয়রনে ভরপুর মিষ্টি আলু শীতের জন্য আদর্শ একটি খাবার। পুষ্টিগুণের কারণে একে সুপারফুডও বলা হয়।

বাদাম ও শুকনা ফল: শীতকালে বাদাম শরীরের জন্য দারুণ শক্তির উৎস। এতে রয়েছে ভালো কোলেস্টেরল, ফাইবার, ভিটামিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। নিয়মিত অল্প পরিমাণ বাদাম শরীরে তাপ উৎপন্ন করে। পাশাপাশি খেজুর, কিশমিশ, অ্যাপ্রিকটসহ বিভিন্ন শুকনা ফল শীতের জন্য উপযোগী।

আপেল: আপেলে থাকা ফাইবার শরীরের উষ্ণতা ধরে রাখতে সহায়ক। এতে প্রায় ৮৬ শতাংশ পানি রয়েছে, ফলে শীতে কম পানি খেলেও শরীর কিছুটা হাইড্রেট থাকে।

আরও যা খেতে পারেন: শীতের খাদ্যতালিকায় মরিচ, দারুচিনি, রসুন এবং বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকসবজি রাখলে শরীর গরম থাকে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে।
তথ্যসূত্র: দ্য নিউট্রিশন সোর্স (হার্ভার্ড)
জেএস/