এমএফসির সঙ্গে মতবিনিময়
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে নিরাপদ গণমাধ্যমের ওপর জোর
এমএফসির সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের ‘মিট অ্যান্ড গ্রিট’ অনুষ্ঠান
অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে স্বাধীন, আত্মবিশ্বাসী এবং নিরাপদ গণমাধ্যমের বিকল্প নেই বলে মতপ্রকাশ করেছেন বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা। সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা ও হয়রানির বহু ঘটনা এখনো অমীমাংসিত রয়ে যাওয়াকে তারা উদ্বেগজনক উল্লেখ করেন। এসব অপরাধের দায়মুক্তি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগের ওপরও জোর দেওয়া হয়।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কানাডা ক্লাবে কানাডা হাইকমিশনের উদ্যোগে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের (এমএফসি) সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের ‘মিট অ্যান্ড গ্রিট’ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা এমন মতামত দেন।
অনুষ্ঠানে জার্মানি, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তবে অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, জাপান ও কসোভো এমএফসির সদস্য হয়েও অনুষ্ঠানে প্রতিনিধিত্ব করেনি।
২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ জোট বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা সুরক্ষায় কাজ করে। বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও সংগঠনটি সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
অনুষ্ঠানে কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং সাংবাদিকদের গণতন্ত্রের প্রহরী হিসেবে অভিহিত করে বলেন, বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকরা নানা চ্যালেঞ্জের মুখে। বাংলাদেশেও পরিস্থিতি সহজ নয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ নানা বাধা থাকা সত্ত্বেও সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
তিনি বলেন, ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়া বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে, যা নারী ও কন্যাশিশুদের ওপর বিশেষভাবে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। আগামী নির্বাচনী সময়ে এ চ্যালেঞ্জ আরও বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যৌথ দায়িত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন কানাডার হাইকমিশনার।
ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের উপরাষ্ট্রদূত আনায়া কার্স্টেন বলেন, জার্মানি সংবাদমাধ্যমকে কোনো বিলাসী উপাদান হিসেবে দেখে না, বরং গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা ও জনআস্থার অপরিহার্য ভিত্তি মনে করে।
তিনি উল্লেখ করেন, গত এক বছরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিবর্তনের সঙ্গে গণমাধ্যম ক্ষেত্রেও নতুন আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো এখনো প্রবল। সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ভয়ভীতি ও হয়রানির বহু ঘটনা নিষ্পত্তিহীন রয়ে গেছে, যা দায়মুক্তির সংস্কৃতি আরও পুষ্ট করে। এসব ঘটনার পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্তের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
আনায়া কার্স্টেন বলেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দায়িত্বশীল ও স্বাধীন সাংবাদিকতা সঠিক তথ্য প্রদান, বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রতিরোধ এবং বহুমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে স্বাধীন ও নিরাপদ গণমাধ্যম অপরিহার্য।
এমএফসির বৈশ্বিক সহ-সভাপতি হিসেবে জার্মানি বাংলাদেশে স্বাধীন, বহুত্ববাদী ও প্রাণবন্ত গণমাধ্যম পরিবেশ গঠনে সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।
জেপিআই/ইএ