কিবরিয়া ছাপচিত্র প্রদর্শনীতে রবীন্দ্র মৈত্রীর চারুকলার শতাধিক ছবি
কিবরিয়া ছাপচিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নেন রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর লালমাটিয়ায় কলাকেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ‘১৩ তম কিবরিয়া ছাপচিত্র প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় এ প্রদর্শনীর পর্দা নেমেছে।
প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। এতে প্রায় দুই হাজার দর্শনার্থী ও ছাপচিত্রপ্রেমী অংশ নেন।

আয়োজকরা জানান, এবারের প্রদর্শনীর প্রতিপাদ্য ছিল ‘সুলভ মূল্যে ছাপচিত্র, সবার জন্য ছাপচিত্র’। এতে অংশ নেয় মোট ১৮টি প্রতিষ্ঠান। প্রতিবছর দেশের বাইরে থেকেও অনেক প্রতিষ্ঠান এ প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। তবে এবার দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে দেশের বাইরে থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান আসতে পারেনি।
এদিকে, কিবরিয়া ছাপচিত্র প্রদর্শনীতে দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নিয়েছে কুষ্টিয়ায় অবস্থিত বেসরকারি রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ। প্রদর্শনীতে বেসরকারি এ বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আঁকা শতাধিক ছবি স্থান পায়, যার মধ্যে তিনটি ছবি বিক্রিও হয়েছে। তাছাড়া তাদের আঁকা ছবির প্রশংসাও করেছেন বরেণ্য শিল্পী ও শিল্প সমালোচকরা।

রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের প্রভাষক ও প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর প্রদীপ সাহা বলেন, ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু। এ বছর চারুকলা বিভাগ তিন বছরে পদার্পণ করলো। বিভাগে চারটি বিষয় রয়েছে। পেইন্টিং, প্রিন্টমেকিং, ভাস্কর্য ও গ্রাফিক ডিজাইন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেকের আঁকা ছবি এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। তাদের কাজ বেশ প্রশংসিত হয়েছে। বরেণ্য শিল্পী, শিক্ষক, শিল্প সমালোচক ও দর্শকরা প্রশংসা করেছেন। এ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক অনুপ্রেরণা পেয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বেশি ছবি নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রদর্শনীতে অংশ নিতে পারবে বলে প্রত্যাশা করছি।
এর আগে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরেণ্য শিল্পী ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুন নবী। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পানুরাগী মিখাইল ইদ্রিস ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন কিবরিয়া প্রিন্ট মেকিং স্টুডিওর আহ্বায়ক সৈয়দ আবুল বারক আলভী।
বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া। তিনি ১৯২৯ সালের ১ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫০ সালে তিনি কলকাতা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে চারুকলায় স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা সম্পন্ন করেন এবং ১৯৫৬-৬২ সালে জাপানের টোকিও থেকে চিত্রকলায় উচ্চতর শিক্ষা সম্পন্ন করেন।
তিনি একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কার, জাপানের সংস্কৃতিমন্ত্রীর পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৮ সালে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে মনোনীত করা হয়। ২০১১ সালের ৭ জুন প্রখ্যাত এ চিত্রশিল্পী মারা যান। তার স্মরণে এক যুগ ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কিবরিয়া ছাপচিত্র প্রদর্শনী।
এএএইচ/এএমএ