ট্রেড ইউনিয়নের মূল এজেন্ডায় ন্যায্য রূপান্তর অন্তর্ভুক্তির দাবি

ট্রেড ইউনিয়নের মূল এজেন্ডায় জাস্ট ট্রানজিশন অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে ওয়ার্কার্স রিসোর্স সেন্টার (ডব্লিউআরসি)। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর বনানীতে হোটেল সেরিনায় ডব্লিউআরসির নারী কমিটির আয়োজনে ন্যায্য রূপান্তর ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক গ্রুপ সভায় এই দাবি জানানো হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, ট্রানজিশন অর্থ হলো রূপান্তর। জাস্ট ট্রানজিশন মানে হলো ন্যায্য রূপান্তর। বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবেশ দূষণ এবং জীববৈচিত্র ধ্বংসের মতো বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সেই সংকট মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন পরিবেশবান্ধব টেকসই অর্থনীতি, যা জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা তৈরির মধ্যে অর্জন করা সম্ভব।

সভায় বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৭ কোটি ৩৪ লাখ প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা নানা রকম ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে কর্মরত আছে। নানা রকম রূপান্তরের কারণে সেই ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি নদীভাঙন বন্যা ও জলাবদ্ধতা সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি উৎপাদন ত্রাস ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিচ্ছে এবং এসবের ফলে কর্ম ঘণ্টা ত্রাস বেকারত্ব ও স্থানান্তর ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজে যেকোনো পরিস্থিতির সবচেয়ে বিরূপ প্রভাব পড়ে নারীদের ওপর। এই রূপান্তর প্রক্রিয়াতেও সব শ্রমিক ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও নারী শ্রমিকদের ঝুঁকি একটু বেশিই।

দেশের শ্রম বাজারে নারীর সস্তা শ্রম যত বেশি প্রয়োজনীয় ঠিক ততটাই উপেক্ষিত তার নিরাপদ কর্ম পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তারা বলেন, আশার বিষয় হলো ট্রেড ইউনিয়নের মূল এজেন্ডায় জাস্ট ট্রানজিশন অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়ন সদস্য, নীতি নির্ধারক এবং জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সদস্যরা এ বিষয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ট্রেনিং করলে যথেষ্ট তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে অংশীজন পর্যায়ে উপস্থাপন ও নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে।

শ্রম সংস্কার কমিশনের অন্যতম সদস্য সাকিল আখতার চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি ন্যায্য রূপান্তর ও জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য শ্রমিকদের শ্রমজীবনের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। এখনই আমাদের এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রতিকারের পথে এগোতে হবে। শ্রম সংস্কার কমিশনের সর্বশেষ রিপোর্টেও আমরা জাস্ট ট্রানজিশনের বিষয়টিকে নিয়ে এসেছি। আশা করি এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আমরা মুক্ত হতে পারবো।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউআরসির নারী কমিটির চেয়ারম্যান ফাতেমা আক্তার। আরও উপস্থিত ছিলেন ডব্লিউআরসির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ, ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য নাইমুল আহসান জুয়েল, বিলসের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মনিরুল কবির।

ডব্লিউআরসির যুব কমিটির চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আকতার কারিমা ও নারী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান রুবিনা আক্তার ও নারী কমিটির অন্যান্য নেতারা।

এএএম/এমআইএইচএস/এমএস