ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

কর্মচারী নেতা বাদিউল

নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে আন্দোলন ব্যাহত হবে না, ফোরামের কাজ চলবে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:৫৩ পিএম, ২৫ জুন ২০২৫

নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির কারণে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে ব্যাঘাত ঘটবে না। কর্মচারীদের দুই অংশ নিয়ে আন্দোলনে গঠিত বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কার্যক্রমও চলমান থাকবে।

বুধবার (২৫ জুন) সচিবালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর এ কথা বলেন।

সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ দুই ভাগে বিভক্ত। এক অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন মো. বাদিউল কবীর ও নিজাম উদ্দিন আহমেদ এবং অন্য অংশের নেতৃত্বে মো. নূরুল ইসলাম ও মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম। চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলন হচ্ছে এ দুটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠন করা কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে সচিবালয়ে ক্যানটিন পরিচালনার দখল নিয়ে মারামারি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি নূরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ কয়েকজন আহত হন। নূরুল ইসলাম ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যানও বটে। বাদিউল কবীরের গ্রুপের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে নূরুল ইসলাম গ্রুপ।

সংবাদ সম্মেলনে বাদিউল কবীর বলেন, একপক্ষ আইন অমান্য করে তালা ভেঙে সমবায় সমিতির অফিস দখল করেছে। এ নিয়ে কয়েকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এতে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলন ব্যাহত হবে না, ঐক্য ফোরামের কার্যক্রম চলবে।

তিনি বলেন, এক পক্ষ স্বাভাবিক পন্থায় দায়িত্ব গ্রহণ না করে, তারা নিজেদের হাতে আইন তুলে নিয়ে সচিবালয়ে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় ও ভাতৃত্বপূর্ণ কর্মপরিবেশ, সেই ঐতিহ্য নষ্ট করেছেন।

‘সমবায় সমিতির অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালনা কমিটির বিষয়ে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তারা উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেখানে অবস্থান করেছেন। আমি দুপক্ষকেই সংযত হতে বলি। আমার পক্ষে যারা ছিলেন তারা আমার অনুরোধ রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। তাদেরও অনেকে আমার কথা অনুসরণ করে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এর মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সেটা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এটি অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।’

এই কর্মচারী নেতা আরও বলেন, এরপরও কর্মচারীদের নিয়মতান্ত্রিক দাবি-দাওয়া আদায়ের সংগ্রাম থেমে যাবে না। '

সচিবালয় বহুমুখী সমবায় সমিতি সচিবালয়ের ভেতরে দুটি ক্যান্টিন এবং ওএমএসের একটি দোকান পরিচালনা করে। ২০২৩ সালের মার্চে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি পায় এই সমবায় সমিতি। কোরবানির ঈদের আগ পর্যন্ত এই কমিটি সচিবালয়ের ক্যানটিন পরিচালনা করছিল।

সূত্র জানায়, গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর কর্মচারীদের এক পক্ষ ক্যানটিন দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষ বিবাদে জড়ালে ঢাকা বিভাগীয় সমবায় কার্যালয় গত ৩ জুন ১১ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটি করে দেয়। ওই কমিটির লোকজন গত ১৯ জুন সমবায় সমিতির তালা ভেঙে কার্যালয়ের দখল নেন। এরমধ্যে গত ১৯ জুন সমবায় সমিতির বর্তমান কমিটি রিট পিটিশন দায়ের করলে উচ্চ আদালত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।

সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যারা এখন সমবায় সমিতির দখল নিয়েছেন আমরা তাদের আদালতের রায়ের কপি দেই। কিন্তু তারা সেই কপি গ্রহণ করেননি। এরপর আমরা বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে জানাই। বিষয়টি সমাধান করে দেওয়ার জন্য সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনের নেতাদেরও অবহিত করি।

সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত আমাদের কমিটির মেয়াদ থাকলেও গত ১৯ জুন সমিতির কার্যালয়ে তালা লাগায় একটি পক্ষ। এরপর দায়িত্ব হস্তান্তর ছাড়াই ক্যানটিন পরিচালনা করে তারা। এ বিষয়ে আমরা ১৯ জুন শাহবাগ থানায় অভিযোগ দিয়েছি।

এক কর্মচারী নেতা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সমবায় সমিতির বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বাদিউল কবীরের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন কর্মচারী সমিতির কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানে আগে থেকেই নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা ছিলেন। সমবায় সমিতির বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে কর্মচারী নেতারা আলোচনা করেন। এরমধ্যে পুলিশ এসে কর্মচারী নেতাদের সচিবালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা সচিবালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম কটাক্ষ করেন বাদিউলকে। এরপর বাদিউলের অনুসারীরা নূরুল ইসলাম, সেলিমসহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করেন। নূরুল ইসলামের অনুসারীরাও বাদিউলসহ তার পক্ষের বেশ কয়েকজনকে মারধর করেন।

আরএমএম/কেএসআর/জেআইএম