‘প্লট দুর্নীতি’ করেছেন বিচারপতি খায়রুল হক, অনুসন্ধানে দুদক
সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম খায়রুল হক বিধিবহির্ভূতভাবে পূর্বাচলে একটি প্লট নিয়েছেন— এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান এবং উপকর কমিশনারের কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করেছে দুদক। অনুসন্ধানের বিষয়টি জানিয়েছেন দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বিধিবহির্ভূতভাবে একটি প্লট নিয়েছেন এরকম একটি অভিযোগ অনুসন্ধানে নথিপত্র চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’
এ অভিযোগের অনুসন্ধানে দুদকের উপপরিচালক মনিরুল ইসলামকে দলনেতা করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। দলের অন্য সদস্যরা হলেন: সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা, এস এম রাশেদুল হাসান, এ কে এম মুর্তুজা আলী সাগর, মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং উপ-সহকারী পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের স্মারক নম্বর রাজ-৫/২০০৫/৪৮৫, তারিখ ২১-০৯-২০১০ অনুযায়ী ইস্যু করা পত্র এবং ওই পত্রের সংশ্লিষ্ট নথি (নোটশিটসহ) এর ফটোকপি, যেগুলো সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত-তা চাওয়া হয়েছে।
রাজউকের বরাবর পাঠানো চিঠিতে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের সেক্টর-০১, রোড নম্বর-১০২, প্লট নম্বর-০০৪, কোড নম্বর-৮৫১১-এর বরাদ্দসংক্রান্ত নথিপত্রের (নোটশীটসহ) ফটোকপি চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া উপকর কমিশনারের কার্যালয় থেকে আয়কর রিটার্নের নথি ও তাতে দাখিল করা সকল সংযুক্ত রেকর্ডের (শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত) ফটোকপি চাওয়া হয়েছে।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়, ‘অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে উপরোক্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। জরুরি ভিত্তিতে এসব রেকর্ডের ফটোকপি সরবরাহ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা বা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’ অনুসন্ধানের জন্য সময়সীমা সীমিত, সে বিষয়ও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
দেশের ঊনবিংশতম প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে অন্তত দুটি মামলা রয়েছে। দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগে গত ২৭ আগস্ট তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। এর আগে ২৫ আগস্ট খায়রুলের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় মামলা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভুঁইয়া। মামলায় সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তন ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।
এসএম/এমএএইচ/জিকেএস