বলধা গার্ডেনকে ‘কুঞ্জবন’ ঘোষণা
বলধা গার্ডেনকে ‘কুঞ্জবন’ ঘোষণা করেছে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়/ফাইল ছবি
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী রাজধানীর ওয়ারীর বলধা গার্ডেনকে কুঞ্জবন ঘোষণা করেছে সরকার।
গত ১০ আগস্ট কুঞ্জবন ঘোষণা করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এরপর ১৯ আগস্ট এটি গেজেট প্রকাশিত হয়।
তফসিলে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঢাকার মিরপুরের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের নিয়ন্ত্রণাধীন এ ভূমি বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরাজি ও লতাগুল্মের সমাহার, জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কাছে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও প্রথাগত মূল্যবোধের স্মৃতিস্মারক হিসেবে চিহ্নিত ও ব্যবহৃত। কাজেই ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২’ এর ২৩(১) ধারায় দেওয়া ক্ষমতাবলে ঢাকাস্থ ওয়ারীর বলধা গার্ডেনকে সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ থেকে কুঞ্জবন হিসেবে ঘোষণা করা হলো।
তফসিলে মৌজা, খতিয়ান নং, দাগ নং, জিপিএস রিডিং উল্লেখ করা হয়েছে। এতে মোট জমির পরিমাণ ৩ দশমিক ৩৮৮৪ একর।
বলধা গার্ডেনটি ১৯৫১ সালে ‘কোর্ডস অব ওয়ার্ডস’ এর আওতায় ন্যস্ত হয়। পরে ১৯৬২ সাল থেকে বাগানটি বন বিভাগের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয় বলে তফসিলের মন্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে।
- আরও পড়ুন
- ছুটির দিনে ঘুরে আসুন বলধা গার্ডেনে
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের ‘জাতীয় ঐতিহ্য, স্মারক বৃক্ষ, পবিত্র বৃক্ষ এবং কুঞ্জবন ঘোষণা’ শিরোনামে ২৩(১) ধারায় বলা হয়েছে- ‘সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সরকারি বন, কোনো সংস্থার অধীন ভূমি, খাস জমি বা কমিউনিটির মালিকানাধীন ভূমিতে অবস্থিত বৃক্ষ বা কুঞ্জবন যাহা সাংস্কৃতিক, প্রথাগত, ধর্মীয় বা স্মৃতিস্মারক হিসেবে চিহ্নিত ও ব্যবহৃত এবং যাহা বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে উক্ত এলাকায় পরিচিত তাহা উক্ত ভূমির মালিক, সংস্থা বা ব্যক্তির আবেদনক্রমে, জাতীয় ঐতিহ্য, স্মারক বৃক্ষ, পবিত্র বৃক্ষ, বা ক্ষেত্রমত, কুঞ্জবন হিসেবে ঘোষণা করিতে পারিবে।’
‘তবে শর্ত থাকে যে, কমিউনিটি বা ব্যক্তির ক্ষেত্রে তাহাদের প্রথাগত বা সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ এবং অনুশাসন সংরক্ষণ করিতে হইবে।’
বলধা স্টেটের জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী ১৯০৯ সালে বাগানটি তৈরি করেন। তিনি দুটি উদ্যান তৈরি করেন প্রথম উদ্যানের নাম রাখেন ‘সাইকী’, পরে তৈরি হয় দ্বিতীয় উদ্যান ‘সিবলী’। নরেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরীর মৃত্যুর পর কোনো একসময় থেকে এ দুটি উদ্যানকে সম্মিলিতভাবে বলধা গার্ডেন নামে ডাকা শুরু। এলাকার নাম বলধা অনুসারে বাগানটির নাম বলধা হয়েছে। এখানে ৮০০ প্রজাতির প্রায় ১৮ হাজার গাছে আছে। আছে রবীন্দ্রস্মৃতি নিয়ে থাকা জয় হাউজ, সূর্যঘড়ি আর বিরল সব প্রজাতির নানা গাছগাছালি ও লতা।
আরএমএম/ইএ/জিকেএস