ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

টিকিট বিক্রি করে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ সায়মন ওভারসীজের বিরুদ্ধে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:৫৮ এএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
 

উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে ঢাকার গুলশানের সায়মন ওভারসীজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নিয়ম বহির্ভূতভাবে ক্রস বর্ডারে ১ হাজার ৮৯৪টি এয়ার টিকিট বিক্রি করেছে। এসব টিকিট বিক্রির অর্থ হিসেবে ১৬ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে—এমন অভিযোগ এখন তদন্ত করছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

এদিকে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে মন্ত্রণালয়। গত রোববার (৭ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়ের পর্যটন শাখা-৩–এর উপসচিব মির্জা মুরাদ হাসান বেগ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। তবে সায়মন ওভারসীজের দাবি, এ অভিযোগ বানোয়াট। একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যার জবাবে সেটিও সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

রাজধানীর গুলশান-১ এর ২২ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে সায়মন ওভারসীজ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসফিয়া জান্নাত সালেহ। তিনি অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সাবেক মহাসচিব।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের (জিডিএস) মাধ্যমে ট্রাভেল এজেন্টরা এয়ার টিকিট বিক্রি করেন। এ জন্য নিজস্ব আইডি থাকে, যা বাংলাদেশ থেকেই পরিচালনা করতে হয়। ওই আইডির মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ) এর মাধ্যমে এয়ারলাইন্সগুলোকে টাকা পরিশোধ করতে হয়। এয়ারলাইন্সগুলো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে অর্থ নেয়, যার হিসাব দেশের রিজার্ভে যুক্ত হয়।

কিন্তু সায়মন ওভারসীজ অবৈধভাবে নিজেদের আইডি বিভিন্ন দেশের ট্রাভেল এজেন্সিকে দিয়েছে। এসব এজেন্সি বিদেশে টিকিট বিক্রি করছে, কিন্তু সেই বিক্রির টাকা আর বাংলাদেশে আসছে না—এমন অভিযোগ সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে জমা পড়ে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

গত ৭ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, সায়মন ওভারসীজ লিমিটেডের ক্রস বর্ডার (দেশের বাইরে) টিকিট বিক্রির একটি স্টেটমেন্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়—২০২৪ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ২১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের আইএটিএ নম্বর ৪২৩০০২৩০ এর জিডিএস আইডি ব্যবহার করে মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১ হাজার ৮৯৪টি এয়ার টিকিট বিক্রি করেছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা।

ওই টিকিটগুলো ব্যবহার করে যাত্রীরা যেসব দেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছেন কিংবা তৃতীয় দেশে ভ্রমণ করেছেন, তারা সংশ্লিষ্ট দেশেই টিকিটের টাকা পরিশোধ করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, সেই টাকা বাংলাদেশে ফেরত আসেনি। এমতাবস্থায়, ক্রস বর্ডার টিকিট বিক্রির মাধ্যমে অর্থ পাচারের বিষয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সায়মন ওভারসীজ মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠির জবাব দিয়েছে। জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসফিয়া জান্নাত সালেহ জাগো নিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয়ে যে বা যারা এই অভিযোগ করেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। যারা এয়ার টিকিট কালোবাজারি, মজুদ ও উচ্চমূল্যে টিকিট বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কাজ করেছি। এখন প্রতিহিংসা থেকেই তারা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে ব্যাখ্যা চাইলে আমরা তথ্য–প্রমাণ দিয়ে যথাযথ জবাব দিয়েছি।

এমএমএ/কেএএ/