দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর কারণে অন্তর্বর্তী সরকার নৈতিক বৈধতা হারিয়েছে
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
অন্তর্বর্তী সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কড়া সমালোচনা করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, তাদের মনে রাখা উচিত, তারা কোনো নির্বাচিত সরকার নন। বৈধ সরকার হতে পারেন, কিন্তু নির্বাচিত সরকার নন। একটি অনির্বাচিত সরকারের শাসন করার যোগ্যতা ও ক্ষমতা থাকে ততক্ষণই, যতক্ষণ তার নৈতিক বৈধতা থাকে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকার অনেক ক্ষেত্রেই সেই নৈতিক বৈধতা হারিয়েছে।
প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তার ঘটনার প্রতিবাদে সংবাদপত্রের মালিক ও সম্পাদকদের দুটি সংগঠন- নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) এবং সম্পাদক পরিষদ যৌথভাবে যে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে, সেখানে এসব কথা বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীতে ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত এই সভা পরিচালনা করেন দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ। সভা শেষে হোটেলের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করা হয়।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এ রকম একটি সভার প্রয়োজন হবে, তা আমরা কেউ কল্পনাও করিনি। তিনি জানান, গত দেড় মাসে তিনি দেশের বিভিন্ন শহর সফর করেছেন। সেসব জায়গায় সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি তুলে ধরেছেন, তা হলো নিরাপত্তার অভাব। এই নিরাপত্তাহীনতাকে মানুষ নানাভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
তিনি বলেন, এই নিরাপত্তার অভাব নারীদের ক্ষেত্রে যেমন সত্য, তেমনি ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, দলিত ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের ক্ষেত্রেও সত্য। একইভাবে এটি রাজনীতিবিদদের জন্যও সত্য- যারা নির্বাচনে অংশ নিতে চান।
তিনি উল্লেখ করেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি শহীদ হওয়ার আগেই এই উদ্বেগগুলো মানুষের কথাবার্তায় উঠে এসেছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, জনগণের কথাবার্তায় দ্বিতীয় যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, তা হলো বর্তমান সরকারের ওপর আস্থার অভাব। মানুষ পরিষ্কারভাবে বলছে, বর্তমান সরকার, তার প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা দিতে পারবে- এই বিষয়ে তাদের আস্থা নেই।
তিনি বলেন, এই কথাগুলো যখন মানুষ বলছিল, তখনো কিন্তু সাম্প্রতিক এই ভয়াবহ ঘটনাগুলো ঘটেনি। অর্থাৎ, এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে- সে বিষয়ে মানুষ আগেই বিভিন্ন সময় ইঙ্গিত ও সংকেত দিয়ে এসেছে।
কেএইচ/এএমএ/এএসএম