ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

দিলকুশায় নেভেনি আগুন, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:১৩ পিএম, ১৪ মার্চ ২০১৫

রাজধানীর মতিঝিলে দিলকুশার আমানউল্লাহ ভবনে লাগা আগুন ১১ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দ্বিতীয় তলার আগুন ছড়িয়ে পড়েছে তৃতীয় তলায়। সেখান থেকে বের হচ্ছে কালো ধোঁয়ার কুন্ডলি।

রাত ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিশ্চিত করেন, আগুন ভবনটির দ্বিতীয় তলা থেকে তৃতীয় তলায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। এই আগুন আরও উপরে ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভবনটির এখন যেখান থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে সেই তৃতীয় তলায় আল আরাফাহ ব্যাংকের দিলকুশা শাখার অফিস। এছাড়া ভবনটির পঞ্চম তলায় রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের শাখা রয়েছে। পুরো ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটলে বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে, দ্বিতীয় তলার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও সেখান থেকে সাদা ধোঁয়া বের হওয়া এখনো বন্ধ হয়নি।

আগুন লাগা কক্ষটিতে ফলস সিলিং থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশি সমস্যা দেখা দেয় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস সূত্র। তাছাড়া ভেতরে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক তার ও অন্যান্য ক্যাবল থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিল না ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানান, ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট শুধু পানি সরবরাহ করেছে। একেকটি বহন করা গাড়ীতে পানি থাকে ১১ হাজার লিটার। এরপর ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষও তিন দফায় পানির গাড়ী পাঠিয়েছে।

এর আগে শনিবার ৩টা ২০ মিনিটের দিকে ৬৩ দিলকুশা মিয়া আমান উল্লাহ ভবনের বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানী লিমিটেডের অফিস থেকে মূলত: আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুনে দ্বিতীয় তলার পুরো অফিস কক্ষটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভেন্টিলেশন পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেনটেন্যান্স) এটিএম শাকিল নেওয়াজ খান বলেন, রিমেথড পদ্ধতি ব্যর্থ হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে ভেন্টিলেশন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

এ পদ্ধতিতে প্রথমে পানি দিয়ে তাপমাত্রা কমানো হচ্ছে। ওই ভবনের যে তলায় আগুন ধরেছে, তার ভেতরের তাপমাত্রা এখন ২০০-৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ কারণে ফায়ার ফাইটাররা সেখানে ঢুকতে পেরে তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে এই পদ্ধতিতে কাজ করে দ্বিতীয় তলার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

তবে শাকিল নেওয়াজ বলেন, ‘কার্যালয়ের ভেতরে বিভিন্ন উপকরণ পুড়ে যাওয়ায় ধোঁয়া বিষাক্ত হয়ে গেছে।

অন্যদিকে, আগুন লাগার পর থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে নতুন করে তৃতীয় তলা থেকে ধোঁয়ার কুন্ডলি বের হওয়ায় উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন তারা। ভেতরে প্রবেশে কোনো পথ না থাকায় ভেতরে ঢুকতেও পারছেন না ফায়ার কর্মীরা। তাছাড়া কালো ধোঁয়ার কারণে টর্চ লাইটের আলোতে ভেতরের অবস্থা কিছুই দেখা সম্ভব হচ্ছে না। ভবনটির ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ড রাতের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলামসহ (৫০) চারজন আহত হয়েছেন।

রফিকুল ইসলামকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত অন্য তিনজন হচ্ছেন দমকলকর্মী এফ ও আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক কাজী আনোয়ার হোসেন ও জাকারিয়া আহমেদ। তারা ঘটনাস্থলেই রেডক্রিসেন্ট মেডিকেল টিমের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিসের কাজে সহায়তা করছে মতিঝিল থানা পুলিশ, র‌্যাব, ও ওয়াসার কর্মীরা। এছাড়া তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ইউনূস টাওয়ারের নিজস্ব ফায়ার কর্মীরা।

ভবনটিতে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, পঞ্চম তলায় ইসলামী ব্যাংক ছাড়াও প্রাইম ফাইন্যান্স এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কার্যালয় রয়েছে।

জে ইউ/এসআরজে