ড্রাইভিং লাইসেন্স-পাসপোর্ট পেতে বেশি ভিড় উন্নয়ন মেলায়
‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় অদম্য বাংলাদেশ’ স্লোগানে চলছে ৪র্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা-২০১৮। তিন দিনের এই মেলায় আজ (শুক্রবার) সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও পাসপার্ট অফিসের স্টলে। সহজেই ও স্বল্প সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের জন্যই মানুষ ভিড় করছেন স্টল দু’টিতে।
সেই সঙ্গে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের স্টলেও। এখানে বৈধ ও সঠিক পদ্ধতিতে বিদেশ গমনেচ্ছুদের সবধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যাংকিং সুবিধাসহ একই ছাতার নিচে বিদেশ যাওয়ার বিভিন্ন সেবাও দেয়া হচ্ছে। ফলে উন্নয়ন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা এই স্টলগুলোতেই সবচেয়ে বেশি ভিড় করছেন।
মেলায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) স্টলে দেয়া হচ্ছে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের সেবা।
বিআরটিএ স্টলের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সাজিদ আহমেদ জানান, সব কাগজপত্র সঠিকভাবে জমা দিলেই শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনও করা যাচ্ছে এখানে।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের স্টলে আগ্রহীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। উন্নয়ন মেলার ১৮৭-১৮৯ নম্বর স্টল থেকে এ সেবা দেয়া হচ্ছে।
সেখানে দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা চৌধুরী জানান, রি-ইস্যু এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য যারা ভ্যাটসহ ৬ হাজার ৯০০ টাকা এবং আগের পাসপোর্ট জমা দেবেন শুধু তারাই একদিনে নতুন পাসপোর্ট নিতে পারবেন। তবে কেউ চাইলে নতুন পাসপোর্টের জন্যও আবেদন করতে পারবেন, সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক নিয়মে সেবা দেয়া হবে।
তিনি আরও জানান, জরুরি রি-ইস্যু আবেদনের ক্ষেত্রে এক দিনে পাসপোর্ট ইস্যু, বেসরকারি ব্যাংকের বুথ স্থাপনের মাধ্যমে সরাসরি অনলাইনে পাসপোর্ট ফি দেয়া এবং পাসপোর্ট ও ভিসা সম্পর্কিত সব ধরনের তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের ভিড় দেখা গেছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের স্টলে। সেখানে নারী-পুরুষ সবাই যোগ্যতা ও পছন্দ মতো পেশায় ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে নাম রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ পাচ্ছেন।
এ ছাড়া ব্যাংকিং সুবিধাসহ একই ছাতার নিচে বিদেশ যাওয়ার বিভিন্ন সেবাও দেয়া হচ্ছে সেখানে। মেলা চলাকালে প্রতিদিন দেড় হাজার লোকের রেজিস্ট্রেশন করা হবে।
মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে বন্ধুদের সঙ্গে উন্নয়ন মেলায় এসেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সালসাবিল রাহি।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের জেনেছি উন্নয়ন মেলায় ড্রাইভিং লাইসেন্স করা যাচ্ছে। সাধারণত বিআরটিএতে গেলে লাইসেন্স পেতে খুব ঝামেলা পোহাতে হয়। তাই তাৎক্ষণিক সহজ উপায়ে লার্নার লাইসেন্স করতে এই উন্নয়ন মেলায় এসেছি। বৃহস্পতিবার ফরম নিয়েছিলাম, আজ (শুক্রবার) জমা দিয়ে ১ ঘণ্টার মধ্যেই লাইসেন্স পেয়ে গেলাম।
পাসপোর্টের বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী নাহিদ মোহম্মাদ হাবীব। তিনি বলেন, সহজেই পাসপোর্ট করা যাচ্ছে উন্নয়ন মেলায়- এমন তথ্যর ভিত্তিতে এখানে এসেছি। সব ধরনের তথ্য এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এর আগে উন্নয়ন মেলার সব স্টল ঘুরে দেখলাম। পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স আর বিদেশে যাওয়ার তথ্য জানতে দর্শনার্থীরা এসব স্টলেই বেশি ভিড় করছেন।
বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণায় মুখরিত উন্নয়ন মেলার স্থল রাজধানীর আগারগাঁও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠ। সকাল থেকেই দর্শনার্থীরা মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল গিয়ে উন্নয়নের তথ্য, বিভিন্ন সেবা গ্রহণের তথ্য জেনে নিচ্ছিলেন।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবারের মেলায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার ৩৩০টি স্টল রয়েছে। যেখান থেকে জনগণ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পারছেন। এসব স্টলের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০টি, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ১৯টি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৬টি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১৬টি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১০টি এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ৯টি স্টল রয়েছে।
বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এএস/এমএমজেড/এনএফ/এমএস