মাদক ব্যবসার জেরে র্যাবের সোর্স কাশেমকে খুন করে রাতুল
বাম থেকে মাসুদ, রাতুল, রেজাউল, রুবেল
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানাধীন পরিকল্পনা কমিশন এলাকার ফুটপাতে গত ৫ সেপ্টেম্বর র্যাবের সোর্স কাশেম হত্যার ঘটনায় মূলহোতা রাতুলসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) পটুয়াখালী থেকে সুইচ গিয়ারসহ হত্যায় জড়িত মাসুদ এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী জাহাঙ্গীর ওরফে রাতুল, রেজাউল ও রুবেলকে গ্রেফতার করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর প্রায় ১১শ গ্রাম গাঁজাসহ র্যাবের হাতে গ্রেফতার হন এক নারী মাদক ব্যবসায়ী ও তার ছেলে। এরপর শেরেবাংলা নগর থানায় র্যাব বাদী হয়ে মামলা করে। গ্রেফতার নারী মাদক ব্যবসায়ীর নামে আগের তিনটি মাদক মামলা তদন্তাধীন। ছেলেও দুটি মামলার আসামি। চল্লিশোর্ধ্ব ওই নারী মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে অসম ও অসামাজিক সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাতুল।
রাতুলের ধারণা, ওই নারী মাদক ব্যবসায়ী ধরা পড়ার পেছনে হাত আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স হিসেবে পরিচয় প্রদানকারী কাশেম ওরফে কাইশ্যার (৩৫)। এ ঘটনায় কাশেমকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে হত্যার পরিকল্পনা করে রাতুল। এর জেরেই পরিকল্পিতভাবে গত ৫ সেপ্টেম্বর খুন করা হয় কাশেমকে।
হত্যার ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মামাতো ভাই লেগুনা চালক রেজাউলসহ রাতুল আড্ডা দেন পূর্বপরিচিত রুবেলের দোকানে। আড্ডার মাঝে এসে যোগ দেন রিকশাচালক মাসুদ। কথায় কথায় কাশেমকে শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা গুছিয়ে আনা হয়। রাতুল ও রুবেলের মোটরসাইকেলে চারজন মিলে খুঁজতে থাকে কাশেমকে। কাশেমকে না পেয়ে তার স্ত্রী নাহারকে কাশেমের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা। নাহার যেন এ বিষয়ে স্বামীকে কিছু জানাতে না পারে সে জন্য নাহারের মোবাইল ফোনটিও ভেঙে ফেলা হয়।
একপর্যায়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং এলাকায় তারা কাশেমকে পেয়ে যায়। ধারালো সুইচ গিয়ার বের করে তাকে ধাওয়া করতে থাকে তারা। প্রাণভয়ে দৌড়াতে থাকা কাশেম পরিকল্পনা কমিশনের সামনের ফুটপাতে পড়ে যান। এরপর কাশেমকে ধরে ফেলে তারা। মাসুদ রাতুলের সুইচ গিয়ার দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করতে থাকে কাশেমকে। এরপর কাশেমের নিথর দেহ ফেলে চলে যায় তারা। পরে পথচারীরা উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর নিহতের স্ত্রী নাহার বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন। ঘটনার পরই তদন্ত শুরু করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ। তৈরি করা হয় একাধিক টিম। পটুয়াখালী জেলার দুর্গম চরাঞ্চল থেকে সুইচ গিয়ারসহ আটক করা হয় হত্যাকারী মাসুদকে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় মূল পরিকল্পনাকারী জাহাঙ্গীর ওরফে রাতুল, রেজাউল ও রুবেলকে।
জেইউ/এমএসএইচ/এমকেএইচ