শনিবার গণঅবস্থান ও বিক্ষোভ করবে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে লালমনিরহাট ও কুমিল্লায় সংখ্যালঘুদের আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিল ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবিতে আগামী শনিবার (৭ নভেম্বর) সারাদেশে গণঅবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত জানান, শনিবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড় চত্বর ও ঢাকার শাহবাগ মোড়ে এ কর্মসূচি পালিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সের ঘটনাকে পুঁজি করে সাম্প্রদায়িক শক্তি বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অভিসন্ধির বাস্তবায়ন করছে। দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেই এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, চলতি বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাত মাসে ১৭ ব্যক্তি সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়ে মারা গেছেন, হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ১০ জনকে, হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে ১১ জনকে, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৩০ জনের ওপর, শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়েছে ৬ জনের, এ কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন, অপহরণ করা হয়েছে ২৩ জনকে, ভাঙচুর করা হয়েছে ২৭টি প্রতিমা এবং নিখোঁজ রয়েছেন ৩ জন।
আরও দাবি করা হয়, এ সময়ের মধ্যে ২৩টি মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, জোরপূর্বক ধর্মান্তর করা হয়েছে ৭ জনকে, বসতভিটা ও শ্মশান দখলের চেষ্টা করা হয়েছে ৭৩ বার, পুরোপুরি দখল হয়েছে ২৬টি, গ্রামছাড়া করা হয়েছে ৬০টি পরিবারকে এবং দেশত্যাগের হুমকি দেয়া হয়েছে ৩৪ জনকে।
রাণা দাশগুপ্ত বলেন, ‘ভেবেছিলাম করোনাভাইরাস মহামারি সমাজকে অনেক বেশি মানবিক করবে। কিন্তু দুঃখের সাথে লক্ষ করলাম সমাজে মানবিকতা আরও নিম্নমুখী হয়েছে। একদিকে নারী, অপরদিকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে প্রতিনিয়ত নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এরমধ্য দিয়ে তৃণমূলে সাম্প্রদায়িকতাকে অনেক বেশি প্রোথিত করে চলেছে। অথচ সরকার-প্রশাসন এক্ষেত্রে রহস্যজনক নীরবতা পালন করে চলেছে। এহেন সামগ্রিক পরিস্থিতিতে আমরা শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন।’
আবু আজাদ/বিএ/জেআইএম