অকারণে বের হওয়ায় আড়াই ঘণ্টায় ২০ জনকে সাড়ে ৯ হাজার টাকা জরিমানা
রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে র্যাব-৩ এর সহযোগিতায় চলছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। আলম মিয়া (৪০) নামে একজনকে প্রাইভেটকার থেকে নামানো হয়। তিনি জানান, তার ভাই বিদেশে যাবেন। রাত ৩টায় তার ভাইয়ের ফ্লাইট। ম্যাজিস্ট্রেট জিজ্ঞেস করেন, করোনার মুহূর্তে বিমানবন্দরে একজনের বেশি যেতে দেবে না। আপনি কেন যাচ্ছেন? উত্তরে আলম মিয়া জানান, ভাইকে এগিয়ে দেয়ার জন্যই যাচ্ছেন।
ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, এটা জরুরি কাজে বের হওয়ার জন্য কোনো যৌক্তিক কারণ নয়। এ কারণে তাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শুধু আলমই নন, এমন অনেকেই ঘর থেকে বেরিয়েছেন, যাদের কেউ আত্মীয়ের বাসায় খাবার দেয়ার জন্য, কেউ বা যাচ্ছেন বসের বাসায় গৃহস্থালির কাজ করার নাম করে।
টানা আড়াই ঘণ্টায় ২০ জনকে করোনার বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের কারণে বিভিন্ন পরিমাণে মোট ৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
র্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে কাকরাইল মোড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ইব্রাহিম নামে এক ব্যক্তি রিকশাযোগে পুরানা পল্টন থেকে শান্তিনগর মোড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে যাচ্ছিলেন। মোবাইল কোর্টের সামনে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের কথা বলেন পরে আবার বলেন তিনি মাশরুম কিনতে যাচ্ছেন। দুই রকম তথ্যের কারণে মোবাইল কোর্ট তাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন।
করোনার কারণে বাইরে বের হতে না পেরে ফুটবল খেলার জন্য ফুটবলের অ্যাঙ্কলেট কিনতে বের হয়েছিলেন সাজেদুল ইসলাম। র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পরে জরিমানা গুনতে হয় ৩০০ টাকা।

জরিমানা প্রদান করে সাজেদুল বলেন, লকডাউনে ঘর থেকে বের হতে পারি না। বন্ধুরা মিলে ভেবেছিলাম একটা ফুটবল ম্যাচ খেলব। এ কারণে অ্যাঙ্কলেট কিনতে বের হই। কিন্তু মাঝে র্যাব ধরে ৩০০ টাকা জরিমানা করল।
এ ব্যাপারে ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, সরকারের নির্দেশনায় কঠোর লকডাউন চলছে। এ সময়টায় অত্যন্ত অত্যাবশ্যক প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। এই সময়ে মাশরুম কেনা বা খাওয়া খুবই জরুরি কোনো বিষয় নয়। এজন্য ওই ব্যক্তিকে ৫০০ টাকার জরিমানা করেছেন মোবাইল কোর্ট।
অভিযান পরিচালনা শেষে পলাশ কুমার বসু বলেন, এবার সরকার যে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে তা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি জীবিকা নিশ্চিত করার জন্য। হয়তো লকডাউনের কারণে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে কিন্তু এটার দীর্ঘমেয়াদি ফল রয়েছে। ব্যক্তি-পরিবার, সমাজ, দেশকে করোনা থেকে সুরক্ষার দিকটা বিবেচনায় আমরা কঠোরভাবে সরকারি বিধিনিষেধ পরিপালনের চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ পরিপালনে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। একান্তই জরুরি ও অত্যাবশ্যক কারণ ছাড়া বা বিধিনিষেধের নির্দেশনার আওতার বাইরে যারা রয়েছেন তারা শুধু বের হতে পারছেন। এর বাইরে আমরা কিন্তু চেকপোস্ট বসিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জিজ্ঞাসাবাদ করছি, যাদের কারণ যথোপযুক্ত মনে হচ্ছে না তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে, জরিমানা করা হচ্ছে।
ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু আরও বলেন, এর মধ্যেও আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, কেউ যাচ্ছেন মাশরুম কিনতে, কেউ আবার যাচ্ছেন স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলার অ্যাঙ্কলেট কিনতে, আবার কাউকে কাউকে বলতে শুনলাম ধোলাইপাড়ে ঘুরতে যাচ্ছেন, যা করোনার কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে পড়ে না। এজন্য জরিমানা করা হয়েছে। আমরা জরিমানার চেয়ে সচেতনতাকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। নিয়ম না মানলে কঠোর আইন প্রয়োগে পিছুপা হবো না।
টিটি/এআরএ/জিকেএস
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় মিরপুরের আরামবাগে জে-ড্রাম স্থাপন
- ২ ২৫ নারী উদ্যোক্তাকে নার্সারি স্থাপনে জায়গা বরাদ্দ দিলো উত্তর সিটি
- ৩ তৃতীয় লিঙ্গের ৩০ জনকে অস্থায়ী দোকান স্থাপনের অনুমতি উত্তর সিটির
- ৪ ঘনকুয়াশায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ, রাতভর যাত্রীদের চরম ভোগান্তি
- ৫ সন্দেহভাজনদের ভারতে পালানোর তথ্য প্রত্যাখ্যান মেঘালয় পুলিশের, যে ব্যাখ্যা দিলো ডিএমপি