জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি: পাঁচ সেবায় মূল্য বাড়ালো বিকডা
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে এবার পাঁচ ধরনের সেবায় ২৩ শতাংশ করে মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা)।
বুধবার (১০ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন বিকডা মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার।
তিনি বলেন, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সংশ্লিষ্ট পাঁচ সেবায় মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এগুলো হলো- হলেজ চার্জ, লিফট অন-অফ চার্জ, ইমপোর্ট হ্যান্ডলিং প্যাকেজ চার্জ, এক্সপোর্ট স্টাফিং প্যাকেজ চার্জ ও ভিজিএম চার্জ। গত ৪ নভেম্বর থেকে এ মূল্য কার্যকর ধরা হচ্ছে।'
বিকডা সূত্রে জানা গেছে, প্রতি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনারের হলেজ চার্জ অর্থাৎ কনটেইনার পরিবহন চার্জ পূর্বে ছিল এক হাজার ১৫০ টাকা, বর্তমানে করা হয়েছে এক হাজার ৪১৫ টাকা। একই চার্জ ৪০ ফুট কনটেইনারের জন্য আগে ছিল দুই হাজার ৩০০ টাকা, বর্তমানে করা হয়েছে দুই হাজার ৮৩০ টাকা।
আবার, প্রতি ২০ ফুট এবং ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনারের লিফট অন-অফ চার্জ অর্থাৎ কনটেইনার ওঠা-নামার চার্জ আগে ছিল ৩৪৫ টাকা, বর্তমানে করা হয়েছে ৪২৫ টাকা।
প্রতি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনারের ইমপোর্ট হ্যান্ডলিং প্যাকেজ চার্জ অর্থাৎ আমদানি পণ্য কনটেইনার থেকে খালাস চার্জ আগে ছিল সাত হাজার ৯৩০ টাকা। বর্তমানে করা হয়েছে নয় হাজার ৭৫৪ টাকা। একই চার্জ ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনারের জন্য পূর্বে ছিল নয় হাজার ১৫০ টাকা, বর্তমানে করা হয়েছে ১১ হাজার ২৫৫ টাকা।
প্রতি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনারের এক্সপোর্ট স্টাফিং প্যাকেজ চার্জ অর্থাৎ রপ্তানি পণ্য কনটেইনারে বোঝাই চার্জ পূর্বে ছিল চার হাজার ১৪০ টাকা, বর্তমানে করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯২ টাকা। একই চার্জ ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনারের জন্য পূর্বে ছিল পাঁচ হাজার ৫২০ টাকা, বর্তমানে করা হয়েছে ছয় হাজার ৭৯০ টাকা।
এছাড়া প্রতি ২০ ফুট এবং ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনারের ভিজিএম চার্জ অর্থাৎ কনটেইনারের ওজন মাপার চার্জ পূর্বে ছিল এক হাজার ১৫০ টাকা, বর্তমানে করা হয়েছে এক হাজার ৪১৫ টাকা।
এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিকডার এ মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়বে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে। কারণ বেসরকারি ১৯টি অফডক হয়ে দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ রপ্তানি পণ্য কনটেইনার বোঝাই হয়ে থাকে৷ এছাড়া মোট ৩৭টি আমদানি পণ্যের কনটেইনার বন্দর থেকে অফডক হয়ে খালাস হয়। পাঁচটি সেবায় মূল্যবৃদ্ধির মানে হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মূল্য বেড়ে যাবে। যার প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে সবদিকে শুধু বাড়ছে। এরই মধ্যে আমাদের কারখানাগুলোর ব্যয় ১০ শতাংশের মতো বেড়ে গেছে। কোনোরকম আলোচনা ছাড়াই বিকডা আমাদের হাতে একটি মূল্যবৃদ্ধির তালিকা পাঠিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের তো মনে হয় ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে।
তবে বিকডার সভাপতি নুরূল কাইয়ূম খান জাগো নিউজকে বলেন, আমি দেশের বাইরে আছি। সরকার ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির পর আমাদের অনলাইন মিটিং হয়। সেখানে ডিজেলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেবার মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া বাকি সব আগের মূল্য আছে। মূলত সামঞ্জস্য আনতে পাঁচ ধরনের সেবায় নতুন করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মিজানুর রহমান/এমএইচআর/জিকেএস