ঘুসের টাকাসহ গ্রেফতার: ভূমি অফিসের কর্মচারীর কারাদণ্ড
দুদকের হাতে ঘুসের ১০ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার হওয়া চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ ভূমি অফিসের কর্মচারী সঞ্জীর কুমার দে’কে তিন বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসী আবদুল মজিদ এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত সঞ্জীব কুমার দে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার এনায়েত বাজার গোয়াল পাড়া এলাকার ক্ষিতিশ চন্দ্র দে'র ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি সঞ্জীব কুমার দে আদালতে হাজির ছিলেন।
আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আদালতে দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু।
তিনি বলেন, আদালত রায়ে ১৬১ ধারায় দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরও দুই মাস সশ্রম কারাদণ্ড দেন। অন্যদিকে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরও এক মাস সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর ঘুসের ১০ হাজার টাকাসহ দুদকের ফাঁদ অভিযানে হাতেনাতে গ্রেফতার হন সঞ্জীব কুমার দে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আমেরিকা প্রবাসী এক ব্যক্তি ডবলমুরিং এলাকা থেকে একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন। ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রেশন করার পর আগ্রাবাদ সার্কেল ভূমি অফিসে নামজারি করার জন্য দেওয়া হয়। কিন্তু ভুলবশত ফ্ল্যাট ক্রেতার নাম বিএস খতিয়ান নামজারিতে উঠেনি। পরে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে ভুক্তভোগী নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আগ্রাবাদ সার্কেল ভূমি অফিসে আবেদন করেন।
ফ্ল্যাটটি মালিক আমেরিকা প্রবাসী হওয়ায় তারা ভূমি অফিসের যাবতীয় কাজ সম্পাদকের জন্য চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার ছোট কুমিরা এলাকার বাসিন্দা হাজী মো. শফিকে প্রতিনিধি নিয়োগ করেন। খতিয়ানের ওই খতিয়ান সংশোধনের জন্য আগ্রাবাদ ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সঞ্জীব কুমার দে ২০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন। পরবর্তীসময়ে তা ১০ হাজার টাকায় দফারফা হয়। এ নিয়ে হাজী মো. শফি দুদকে লিখিত অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর দুদকের একটি টিম আগ্রাবাদ ভূমি অফিসে ফাঁদ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় ভুক্তভোগী হাজি শফির কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুস নেওয়ার পর দুদক টিম হাতেনাতে সঞ্জীব কুমার দে'কে আটক করে।
ওইদিনই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর ওই সময়ের সহকারী পরিচালক এইচ এম আখতারুজ্জামান। পরে তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৪ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। ওই বছরের ২৬ জুলাই ওই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আদালত ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
ইকবাল হোসেন/আরএডি/জিকেএস