ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্ব: চাচাতো ভাইকে কুপিয়ে খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:১৫ পিএম, ০৩ এপ্রিল ২০২৩

পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই চলে আসছিল বিরোধ। এছাড়া স্থানীয় বাজারে দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দোকান ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছিল দলাদলি। এর জের ধরে হত্যার শিকার হন শমছুউদ্দিন। তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের এ মামলার প্রধান আসামি তাজ উদ্দীনসহ (৪৪) পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। রোববার (২ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর মৎস্য ভবন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

jagonews24

গ্রেফতার অন্যরা হলেন নাসির উদ্দিন (৩৬), রহিম উদ্দিন (৪০), বশির উদ্দিন (৩৮) ও আহবাব হোসেন তানভীর (২৫)। র্যাব জানায়, গ্রেফতাররা ও নিহত ব্যক্তি আপন চাচাতো ভাই।

আরও পড়ুন: ৪২০ টাকার জন্য বন্ধুকে খুন

সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানান, তাজ উদ্দীন, নাসির, রহিম ও বশির এই চারজন আপন ভাই এবং তানভীর তাদের ভাতিজা। আর নিহিত শমছুউদ্দিন তাদের আপন চাচাতো ভাই। তারা সবাই সিলেটে একই গ্রামে পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করেন। পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ ছিল। এছাড়া স্থানীয় দরবস্ত বাজারের দোকান ও আধিপত্য নিয়ে ছিল দলাদলি। এরই জের ধরে গত দুই মাস আগে শমছুউদ্দিনের সঙ্গে আমিনুদ্দিন ও তাজ উদ্দীনের মধ্যে বাজারের একটি গাছের ডাল কাটা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়।

আরও পড়ুন: ছোট পোশাক পরা নারী দেখলেই খুন করতেন তিনি

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে টানা দুই মাস দুই পরিবারের মধ্যে কয়েক দফা হুমকি-ধামকি চলে। এমনকি একাধিকবার সালিশ বসলেও বিরোধের সমাধান হয়নি।

এরপর ২৪ মার্চ রাতে দরবস্ত বাজারের একটি চায়ের দোকানে শমছুউদ্দিনের ভাই শামীম এবং গ্রেফতার আসামিদের বড় ভাই কামালের জায়গা জমি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় উভয়পক্ষ তাদের পরিবারের সদস্যদের খবর দিয়ে নিয়ে এলে সেখানে একটি বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, এসময় স্থানীয় লোকজন তাদের থামানোর চেষ্টা করে এবং কিছু সময়ের জন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে। এরপর ২৪ মার্চ দিবাগত রাতে তাজ উদ্দীন, কামাল উদ্দীন, নাসির, রহিম, বশির, তানভীর এবং আরিফ মিলে বাঁশ ও কাঠের লাঠি, কাঠের রুইল, লোহার রড ও দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমিনুদ্দিন, শমছুদ্দিন ও অন্যান্যদের ওপর হামলা করেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে।

আরও পড়ুন: ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে দুই যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন

একপর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে শমছুউদ্দিনের মাথার ডান দিকে ও মাথার পেছনে কোপ মারেন তাজ উদ্দীন। ফলে শমছুউদ্দিন গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এদিকে গ্রেফতার নাসির কাঠের রুইল দিয়ে নিহতের ভাই শামীমের মাথার পেছনে আঘাত করে গুরুতর আহত করেন। আর ধারালো দা দিয়ে নিহতের ভাই ফয়সালের হাতে কোপ মেরে একটি আঙ্গুলে গুরুতর জখম করেন বশির। অন্যদিকে তানভীর লোহার রড দিয়ে নিহতের ভাই মাসুকের পিঠে আঘাত করেন।

jagonews24

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, এভাবে এলোপাতাড়ি মারামারির পর তাজ উদ্দিন তার ভাইদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যান। পরে বাজারে উপস্থিত স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের অবস্থা আশংকাজনক দেখে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় আহত শমছুউদ্দিনের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ২৮ মার্চ ঢাকার নিউরো সায়েন্স কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

সেখান থেকে একদিন চিকিৎসার পর পুনরায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠালে ৩১ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শমছুউদ্দিন।

টিটি/জেডএইচ/জিকেএস