মোহাম্মদপুরে নুর নবী হত্যা
অন্যের স্ত্রীকে বাজে মন্তব্য, গলা কেটে মরদেহ ফেলা হয় নদীতে
নুর নবী হত্যায় গ্রেফতার মাহি, পরী, কবির ও ইমরান। ইনসেটে নুর নবী।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে লেগুনাচালক ও লাইনম্যান মো. নবী হোসেন ওরফে নুর নবী (৩২) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাজধানীর বছিলা এলাকার তুরাগ নদী থেকে নুর নবীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গত তিনদিন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- মাহি, পরী, কবির ও ইমরান। তাদের গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশের দাবি, লেগুনার লাইনম্যান নূর নবীর সঙ্গে কবির নামের এক যুবকের বিরোধ ছিল। কবিরকে অপছন্দ এবং তার স্ত্রীকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় নুর নবীকে উচিত শিক্ষা দিতে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। মূল ভূমিকা পালন করেন কবির।
সোমবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরা শপিংমল সেন্টারের সামনে তেজগাঁও পুলিশ বিভাগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।
তিনি বলেন, নুর নবী গত ৪ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ৫ এপ্রিল বছিলা গার্ডেন সিটির শেষ অংশে বুড়িগঙ্গা নদীতে গলাকাটা একটি মরদেহ ভাসছে- এমন খবর পেয়ে থানার টিম দ্রুত সেখানে উপস্থিত হয়। মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে তার পরিচয় মেলে।
আরও পড়ুন: তিনদিন পর মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা, অভিযানে পুলিশ
ডিসি আজিমুল হক বলেন, সাভারে পরিবার নিয়ে থাকতেন নুর নবী। মোহাম্মদপুর এলাকার তিন রাস্তা মোড় স্ট্যান্ডে লেগুনা চালাতেন। মাঝে মধ্যে লেগুনার লাইনম্যানের কাজও করতেন তিনি। মামলার পর কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে মাহি, বছিলা এলাকা থেকে পরী ও কবির এবং সিলেটের ওসমানীনগর থেকে ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়।

যে কারণে নবীকে হত্যা
পুলিশের কাছে গ্রেফতার কবির দাবি করেছেন, তার স্ত্রীকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করায় ও পূর্বশত্রুতার জেরে নুর নবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারাই অংশ হিসেবে তাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডিসি আজিমুল হক জানান, নুর নবী ও গ্রেফতাররা পূর্বপরিচিত। কবিরের সঙ্গে নুর নবীর আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। কিছুদিন আগে নুর নবী কবিরের স্ত্রীকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি ও বিরোধ চরমে ওঠে। কবির নবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তার পরিকল্পনার বিষয়টি অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করলে তারা নবীকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার পরামর্শ দেন। তারা সকলে মিলে নবীকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে পর নদীতে ফেলে দেন।
এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তা এইচ এম আজিমুল হক।
টিটি/বিএ/এমএস