দাবি আদায় না হলে ২৮ আগস্ট থেকে কর্মবিরতি রেলকর্মীদের
ফাইল ছবি
রেলওয়ের রানিং স্টাফদের পেনশন এবং অন্যান্য সুবিধা নিয়ে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে তা ২৭ আগস্টের মধ্যে নিরসন না হলে, পরের দিন ২৮ আগস্ট থেকে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হবে।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় রেলওয়ের রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আমাদের যা প্রাপ্য এবং যেটা আমরা অনেক আগে থেকে পেয়ে আসছি সেটা হুট করে বন্ধ করে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিষয়টি নিয়ে জটিলতা করেছে। আমরা নানাভাবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে বলার পরও আশানুরূপ কোনো ফল দিতে পারেনি। তাই ২৭ আগস্টের মধ্যে বিষয়টি সমাধান না হলে ২৮ তারিখ থেকে আমরা কর্মবিরতিতে যাবো।
আরও পড়ুন: ৪ ট্রেন থামিয়ে সান্তাহারে বিক্ষোভ রানিং স্টাফদের
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে সমিতির সভাপতি রফিক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সভা হয়। সেই সভায় নেওয়া হয় এ সিদ্ধান্ত।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রানিং কর্মচারীদের অবসরোত্তর ৭৫ শতাংশ মাইলেজ মূল বেতনের সঙ্গে যোগ করে পেনশন নির্ধারণের বিধান প্রায় ১৬০ বছর ধরে চলমান। কিন্তু ২০২০ সালে রেলওয়ের কোডিফাইড রুল অমান্য করে রানিং স্টাফদের পার্ট অব পে হিসেবে গণ্য মাইলেজ, যা যুগ যুগ ধরে বেতন খাতের অংশ ছিল, সেখান থেকে সরিয়ে টিএ খাতে নেওয়ার ফলে জটিলতা তৈরি হয়।
আরও পড়ুন: চালকদের দাবি শুনতে কমলাপুরে রেলমন্ত্রী, দেখা করতে আসছেন না কেউ
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ রেলওয়ে রানিং স্টাফদের মাইলেজ যোগে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানে আপত্তি জানায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রেলমন্ত্রী, রেল সচিবসহ রেল প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বহুবার বৈঠক করে প্রাপ্যতার বিষয়ে আইনি ভিত্তি ও যুক্তি তুলে ধরলে তারা আমাদের দাবির যৌক্তিকতা অনুধাবন করে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেন। একই সঙ্গে আমাদের প্রাপ্যতার বিষয়ে আশ্বাস দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছর ১০ এপ্রিল রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় ১৩ এপ্রিল চিঠিটি প্রত্যাহার করে নেয়। পরে রেলমন্ত্রী ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এই সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। যা গত ১১ জুন রেলওয়ের মহাপরিচালক স্পষ্ট করে রানিং স্টাফদের মাইলেজ যোগে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানের নির্দেশ দেন। কিন্তু আবারও ১৮ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আপত্তি জানায়, ফলে সমগ্র রেলে রানিং স্টাফদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
ট্রেনের চালক (লোকো মাস্টার), গার্ড ও টিকিট পরিদর্শকদের (টিটি) রানিং স্টাফ বলা হয়। দিনে আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বা ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন চালালে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাকা মাইলেজ বা রানিং ভাতা হিসেবে পেতেন তারা।
আরএসএম/জেডএইচ/এমএস