সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন চান ট্রাক মালিকরা
ফাইল ছবি
বিগত আওয়ামী লীগে সরকারের আমলে করা সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর বিভিন্ন ধারা সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ও পণ্য পরিবহন মালিক সমিতি। সম্প্রতি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যানের কাছে এ বিষয়ে লিখিত আবেদন করেছে সংগঠনটি।
এই আবেদনে সড়ক পরিবহন আইনের ১৫ ধারা সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেনের জরিমানা সহনশীল পর্যায়ে রাখার দাবিও করেছেন সংগঠনটির নেতারা।
বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ও পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির আবেদনে বলা হয়, সারাদেশে পণ্য পরিবহনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছে চার লাখ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান। কিন্তু সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর কঠোরতার কারণে (বিশেষ করে, অধিক হারে জরিমানা) চালক ও হেলপারের সংখ্যা কমে গেছে। এতে চালকের অভাবে বন্ধ রয়েছে লক্ষাধিক গাড়ি। পাশাপাশি সড়ক ও মহাসড়কে বেড়েছে পুলিশের হয়রানি। এটি বেশি হচ্ছে গাজীপুর, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায়। এর পাশাপাশি সড়কে বেড়েছে ডাকাত, ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য। এর ফলে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় পণ্য পরিবহন খাতে চলছে চরম অস্থিরতা। এ অবস্থার দ্রুত সমাধান না হলে পণ্য পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা কঠোর কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন
- ১১ দাবি নিয়ে প্রাইম মুভার মালিকদের কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি
এবার মহাখালীতে পরিবহন শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট
আবেদনের বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ও পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, ২০১৮ সালে সড়ক পরিবহন আইনটি ছিল আবেগের। এই আইনে অযৌক্তিকভাবে বিভিন্ন ধারা তৈরি করা হয়েছে। যা পরিবহন সেক্টর ধ্বংসের একটি নীলনকশা। এই আইনের দোহাই দিয়ে সড়কে গাড়ি চললেই বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা ও শৃঙ্খলা ফেরাতে মোটরযান অধ্যাদেশ-১৯৮৩ এবং মোটরযান বিধিমালা-১৯৮৪ পরিবর্তন করা দরকার। এই আইনের ১৫টি ধারা অবশ্যই পরিবহন করতে হবে (ধারা ৮৪, ৮৫, ৮৬, ৮৭, ৮৯, ৯০, ৯৮, ১০০, ১০৫, ১১০ সংশোধন, ৮৪, ৮৫ ও ১০৫ ধারাগুলোকে জামিনযোগ্য এবং ৯৯ ধারা সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে)। এছাড়া গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সনদ, রুট পারমিট, ও ট্যাক্স টোকেন এক কাগজে ইস্যু করতে হবে।
যানবাহনে ত্রুটি থাকতে পারে উল্লেখ করে তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার বলেন, এই ত্রুটির জন্য বড় শাস্তি বা জরিমানা মালিক-শ্রমিকরা মেনে নিতে পারেন না। বর্তমানে দেশে চলাচল করা যানবাহনের তুলনায় চালকের সংখ্যা অর্ধেক। নতুন আইনে দুর্ঘটনা জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়ায় চালকের সংকট বাড়ছে। তাছাড়া লাইসেন্স না থাকলে অথবা ফিটনেস ঝামেলা থাকলে জরিমানা ২৫ হাজার করা হয়েছে, যা একজন চালককে দুই মাসের বেতন দিয়ে জরিমানা পরিশোধ করতে হবে। এই ধরনের জরিমানা খুবই অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তাছাড়া ফিটনেস পরীক্ষা করাতে বিআরটিএতে সময় লাগে ১৫ দিন। তাই মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মামলা করা বন্ধ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন জাগো নিউজকে বলেন, ৫ আগস্টের পর সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর বিভিন্ন ধারা সংশোধনের দাবিতে বাস, ট্রাক, মোটরযান মালিক-শ্রমিকরা বিআরটিএতে একাধিক আবেদন জমা দিয়েছেন। তারা সবাই নিজেদের মতো আইনের সংশোধন চান। এ জন্য বিআরটিএ থেকে একটি কমিটি করেছি। আমরা সবার অভিযোগ শুনবো। সব অংশীজনের সঙ্গে কথা বলবো। তাদের যৌক্তিক দাবি থাকলে আইনের সংশোধন করা হবে।
এমএমএ/এএমএ