ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

নির্যাতিত হওয়ার কথা স্বীকার করতে পৌরুষে বাধে কেন?

শাহানা হুদা রঞ্জনা | প্রকাশিত: ১০:৫৮ এএম, ১১ জুন ২০২৫

আমি তখন ছোট। বাসার পাশে আমাদের পরিচিত এক পরিবারে রাতের বেলা হৈ-হুল্লোড় শুনে আব্বা-আম্মার সাথে দৌড়ে গেলাম। গিয়ে দেখলাম ওই বাসার ভদ্রলোক খাটের উপরে হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে আছেন, আর ওনার স্ত্রী মাটিতে দাঁড়িয়ে হাতে ঝাড়– নিয়ে ওনাকে শাসাচ্ছেন, আর গালাগালি করছেন। যা হোক, প্রায়ই ওনাদের মধ্যে এমন ঝামেলা চলতো এবং ভদ্রলোককে গালাগালি শুনতে ও মার খেতে হতো।

তাই সেসময় আমার ধারণা হয়েছিল ছেলেরা বোধহয় দুর্বল এবং সংসারে মার খায়। আর নারীরা সবল, যারা মার দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে বুঝেছি আমার ধারণা ভুল। পরিবারের মূল শক্তি বলতে পরিবারের কর্তাকেই বোঝায়। তবে সব কর্তাই যে স্ত্রীকে মারবেন বা গালাগালি করবেন, তা নয়। অনেকে এসবের কিছু না করেও স্ত্রী ও পরিবারকে নিয়ন্ত্রণ করেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মানুষ বেশ অদ্ভুত, নারীর হাতে পুরুষ লাঞ্ছিত হলে তারা অবাক হয়ে যায়। অথচ পুরুষ নারীকে নিগ্রহ ও নিপীড়ন করলে খুব স্বাভাবিক বলে মনে হয়। পুরুষ বা স্বামী নিপীড়নের শিকার হওয়াটা লজ্জার, কিন্তু নারী বা স্ত্রীকে মারধর করাটা লজ্জার নয়, বরং বেডাগিরি দেখানো যায়।

প্রায় ৫২ বছর আগে আমার সেই পরিচিত মানুষকে স্ত্রীর হাতে শারীরিকভাবে নিগৃহীত হওয়ার পর, সেদিন ভিডিওতে দেখলাম হ্যানয়ের বিমানবন্দরে ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডি ব্রিজিত ম্যাখোঁ দুই হাত দিয়ে স্বামীর মুখে ধাক্কা দিচ্ছেন। যদিও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ জানিয়েছেন, সামাজিক মাধ্যমে যে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে, তা সত্যি হলেও সেটিকে অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ঘটনাটি ছিল একেবারেই ব্যক্তিগত ও সাধারণ পারিবারিক রসিকতার অংশ।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ব্রিজিত একটু বিরক্ত হয়েছিল, কিন্তু কেউ তাকে ধাক্কা দিয়েছে বা ঘুসি মেরেছে, এমন ব্যাখ্যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। প্রত্যেক দম্পতির মাঝেই এমন ছোটখাটো ঝগড়া হয়ে থাকে, এটি একেবারে স্বাভাবিক। বউয়ের হাতে মার খাওয়া নিয়ে ম্যাখোঁ এখন যাই যুক্তি দিন না কেন, এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

পুরুষ স্ত্রীর হাতে মার খাচ্ছেন বা নির্যাতিত হচ্ছেন এই ঘটনা বিশ্বজুড়েই খুব স্বাভাবিক নয়। স্বাভাবিক হচ্ছে নারী পুরুষের হতে মার খাচ্ছেন এই দৃশ্য। কিন্তু সত্যিই কি তাই? সত্যিই কি পুরুষ সংসার জীবনে কোন না কোনোভাবে নির্যাতিত হন না? হ্যাঁ, হন। বাংলাদেশে পুরুষরাও তাদের স্ত্রী বা সঙ্গীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হন, যদিও এ বিষয়ে সামাজিক ও আইনি সচেতনতা এবং তথ্য-উপাত্ত তুলনামূলকভাবে কম।

বিজ্ঞাপন

পুরুষ নির্যাতনের ঘটনাগুলো নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলোর চেয়ে সংখ্যায়  ও বর্বরতার দিক দিয়ে কম বলে,  প্রায়শই আলোচনায় উঠে আসে না। আবার লোকলজ্জার ভয়ে পুরুষ নিজেই প্রকাশ করে না। কারণ পুরুষ নিজেও মনে করে নির্যাতিত হওয়াটা পুরুষের পক্ষে ’শোভা পায় না”। বরং নির্যাতন করাটাই অধিক গর্বের। তবে সীমিত পরিসরে পুরুষ নির্যাতনের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

যেহেতু নারীর হাতে পুরুষকে শারীরিকভাবে কম নির্যাতিত হতে দেখি, তাই ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবার ছাড়া বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামায় না। সেইসাথে দেশে নারী নির্যাতনের হার, বিশেষ করে পারিবারিক সহিংসতার হার এতো বেশি যে পুরুষ কতটা ও কীভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন, তা আলোচনায় আসে না। মাখোঁর ঘটনার পর পুরুষ নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে মজাদার সব আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন এ কেমন প্রেসিডেন্ট যে বউ তাকে চড় মারতে পারেন। কোনো মর্যাদা নাই নাকি? ব্যাডাগিরি দেখাইতে পারে না?

নারী-পুরুষের সম্পর্কটা দ্বান্দ্বিক বা সাংঘর্ষিক নয়। হলে নানাধরনের বিপত্তি ঘটে পরিবারে ও সমাজে। কিন্তু পুরুষ তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার জন্য যেমন নারীর প্রতি সহিংসতা চালিয়ে যায়, তেমনি নারীরও পুরুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমতে থাকে, এধরনের নিপীড়নের কারণে। তাই সহমর্মিতার পরিবার ও সমাজ গঠন করতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। যেকোনো ধরনের নির্যাতনই সন্তানদের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে এবং তাদের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশ মেন'স রাইটস ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন দাবি করেছে যে, বাংলাদেশে পুরুষরা মানসিক ও কখনো কখনো শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তারা উল্লেখ করেছে যে, স্ত্রীর দ্বারা অপমান, অসম্মান, চাপ সৃষ্টি বা সামাজিক হুমকির কারণে পুরুষরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হন। তবে এ বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা বা নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যানের অভাব রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হচ্ছে পুরুষরা শারীরিক নিপীড়নের চাইতে মানসিক নিপীড়নের শিকার বেশি হন। প্রথম ধাক্কাটা আসে স্ত্রী ও নিজের পরিবার বিশেষ করে মায়ের মধ্যে অ্যাডজাস্ট করা নিয়ে। এই চাপ মারাত্মক। অনেকেই দুই পক্ষের এই মতবিরোধের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কেউ কেউ পারিবারিক কলহে জড়িয়ে পড়েন। এরপর আছে স্বামীকে সবসময়ে সন্দেহের চোখে দেখা। ঘরের সঙ্গী যদি সন্দেহ করেন, স্পল্প আয় বলে খোঁটা দেন, মুখরা হন, অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, সংসারের দায়িত্ব পালন না করেন, মা-বাবার পরিবারের দায়িত্ব নিতে না চান, বাড়তি চাহিদা থাকে তাহলে খুবই বিপর্যস্ত হন পুরুষটি। এইসব কথা অনেকে বাইরে প্রকাশ করেন না, কারো কাছে সহযোগিতা চান না কিন্তু মানসিক চাপ বহন করেন। চাপ সহ্য করতে না পেরে কেউ কেউ সুইসাইড করেন। আবার কোন কোন স্ত্রী রাগারাগি করার সময় চিৎকার-চেঁচামেঁচি করেন, চড়-থাপ্পড়, খামচি দিয়ে থাকেন। এগুলো সবই নির্যাতন।

বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এবং পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০-এর মতো আইনগুলো মূলত নারী ও শিশুদের সুরক্ষার জন্য তৈরি। এই আইনগুলোতে পুরুষদের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট সুরক্ষার বিধান নেই। ফলে পুরুষরা নির্যাতনের শিকার হলেও আইনি সহায়তা পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হন।

কিছু পুরুষ অভিযোগ করেছেন যে, যৌতুক বা নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাদের হয়রানি করা হয়। আমার পরিচিত দু’জন ছেলেকে দেখেছি যৌতুকের মিথ্যা মামলায় ফেঁসে যেতে। মূলত ছেলে দুজনসহ তাদের পরিবারকে শাস্তি দেয়ার জন্য, মেয়ের বাড়ির লোকেরা এই অভিযোগ করেছিল।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ মেন'স রাইটস ফাউন্ডেশনের মতো সংগঠন পুরুষ নির্যাতন দমন আইনের দাবিতে আন্দোলন করছে। সংগঠনটি জানিয়েছে তারা পুরুষদের কাছ থেকে নির্যাতনের অভিযোগ পাচ্ছেন। তবে আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে পর্যাপ্ত সহায়তা দিতে পারে না। পারিবারিক সহিংসতা দেশে খুব বড় সামাজিক সমস্যা, যেখানে নারীদের প্রাথমিক ভুক্তভোগী হিসেবে দেখা হয়। তবে, সাম্প্রতিক আলোচনা এবং সীমিত তথ্য অনুযায়ী বলা যায়, পুরুষরাও তাদের স্ত্রীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হতে পারেন।

২০১৮ সালে ’দ্য গার্ডিয়ান’ এর একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ছয়জন পুরুষের মধ্যে একজন গার্হস্থ্য নির্যাতনের শিকার হন, কিন্তু বিশ জনের মধ্যে মাত্র একজন এটি রিপোর্ট করেন। বাংলাদেশে ক্ষেত্রেও একইরকম বা বেশি। পুরুষদের উপর নির্যাতনের মধ্যে মানসিক নির্যাতন, আবেগগত ব্ল্যাকমেইল এবং কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক সহিংসতা অন্তর্ভুক্ত।

উদাহরণস্বরূপ, ২৯ বছর বয়সী মাজেদ ইভেনা আজাদ, তার স্ত্রীর দ্বারা মানসিক নির্যাতন এবং আর্থিক শোষণের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। এটা নিয়ে ডিজিটাল আইনে মামলাও হয়েছে এবং পরে তা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই কেসটি ২০২০ সালে ডয়চে ভেলের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল। (বাংলাদেশ: পুরুষ ভুক্তভোগীদের গার্হস্থ্য নির্যাতনের জন্য সাহায্যের আহ্বান)। এই উদাহরণটি দেখায় যে পুরুষরা মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি আইনি হয়রানির শিকার হতে পারেন, যা তাদের জন্য সামাজিক ও আইনি চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের আইনি কাঠামোর অধীনে পুরুষ ভুক্তভোগীদের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট বিধান নাই। আইনজীবিদের পক্ষ থেকেও মাঝেমাঝে বলা হচ্ছে  পুরুষ ভুক্তভোগীদের ক্রমবর্ধমান কেস মোকাবেলায় ’জেন্ডার নিরপেক্ষ আইন’ দরকার। আমাদের পিতৃতান্ত্রিক সামাজিক কাঠামো পুরুষকে অপরাধী হিসেবে দেখার ধারণাকে শক্তিশালী করে, ভুক্তভোগী হিসেবে নয়। পুরুষ নিজেও তাই মনে করে। আর তাই অনেকে চরম মানসিক নির্যাতনের শিকার হলেও আইনের সাহায্য নিতে চান না, কারো কাছে কিছু খুলে বলেন না, বিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন না। তারা মনে করেন সমাজ তাকে দুর্বল পুরুষ মনে করবে, তাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে ইত্যাদি। বিশ্বের অনেক দেশেই জেন্ডার-নিরপেক্ষ আইন আছে এবং সেই দেশগুলো পুরুষ ভুক্তভোগীদের স্বীকৃতি দিতে শুরু করেছে। পুরুষদের উপর পারিবারিক নির্যাতন কীভাবে সমাধান করা, এ নিয়েও ভাবা উচিত।

পুরুষ তার স্ত্রী বা প্রেমিকার হাতে খুন হচ্ছেন, প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে স্বামী খুনের ঘটনা ঘটছে। অনেক  অভিবাসী শ্রমিক স্ত্রীর দ্বারা প্রতারিত হচ্ছেন। জেন্ডারভিত্তিক অপরাধের যে তথ্য রাখা হয়, সেখানে নারীদের ওপরে কী কী অপরাধ সংগঠিত হয়, তার সংখ্যা আছে। কিন্তু পুরুষ যখন কোনো অপরাধের শিকার হন, সেটার জেন্ডার ভিত্তিক পরিসংখ্যান আর আলাদাভাবে রাখা হয় না।

তবে নারী নির্যাতনের খবর নিয়মিতভাবেই জানা যাচ্ছে। বিশ্বের যেসব দেশে স্বামী বা সঙ্গীর হাতে নারী নির্যাতনের হার বেশি, সেসব দেশের তালিকায় ৪র্থ স্থানে উঠে ২০২১ সালে উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। দেশের ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের ৫০ শতাংশই জীবনে কোন এক সময় সঙ্গীর হাতে শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে। পুরুষ কেন স্ত্রীকে মারধর করে? এই কেন এর কোনো একটা বা দুটো উত্তর নেই। অসংখ্য অযৌক্তিক কারণ আছে বউকে নিপীড়ন করার। গৃহপরিসরে নির্যাতিত নারীর সংখ্যা যেমন অনেক বেশি, বিচার পাওয়ার হারও ঠিক ততোটাই কম। অথচ বাংলাদেশে নারী সুরক্ষায় কঠোর আইন আছে।

বিজ্ঞাপন

তবে সামাজিক মর্যাদা ও নতুন করে নির্যাতনের ভয়ে মুখ খুলেন না নির্যাতিত এসব নারী। নির্যাতনের ঘটনাকে পরিবারের বিষয় হিসেবে মনে করেন তারা। একইভাবে সামাজিক লজ্জার কারণে কিছু পুরুষও মুখ খুলেন না। এদেশের পুরুষদের সব চাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে তারা সবসময়ই নিজেদের শক্তিশালী হিসেবে মনে করে এসেছে। তারা মনে করেন তাদেরই দায়িত্ব নারীদের রক্ষা করা। কিন্তু সেই পুরুষই স্ত্রী বা প্রেমিকার হাতে ঘরের ভেতরে অপমানিত হচ্ছেন বা মার খাচ্ছেন, এটা লজ্জায় তারা বলতে পারে না।

সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে স্ত্রীকে বা নারীকে মারধর করার ও জুলুম করার সময় পুরুষের মধ্যে কোনো সম্ভ্রম কাজ করে না। কিন্তু পুরুষ নির্যাতিত হলে তার সম্ভ্রমহানি ঘটে। কোনো পুরুষ স্বীকার করবেন না যে তিনি স্ত্রীর হাতে মার খাচ্ছেন বা খেয়েছেন। পুরুষরাই নারীদের রক্ষাকর্তা, তারাই শক্তিমান, সেই জায়গাটা থেকে সরে এসে কী করে একজন পুরুষ স্বীকার করবেন যে তিনি স্ত্রী বা প্রেমিকার দ্বারা নির্যাতিত হন!

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক রিপোর্টে দেখেছি, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের উপকমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, শুধু নারীই নন, পুরুষও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অনেক পুরুষ মেয়েদের ট্র্যাপে পড়ে যাচ্ছেন। শুধু নারীই নন, পুরুষও নারীর দ্বারা ভিকটিমাইজ হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা পেশাগত দায়িত্বের বাইরে অনেক কিছু গোপন রেখে কাউন্সেলিং ও আইনি পরামর্শ দিয়ে থাকি। তিনি আরো বলেছেন, পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনের সঙ্গে যৌতুকের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু দাম্পত্য কলহ হলেই যৌতুকের মামলা দেয়া হয়।

নারী-পুরুষের সম্পর্কটা দ্বান্দ্বিক বা সাংঘর্ষিক নয়। হলে নানাধরনের বিপত্তি ঘটে পরিবারে ও সমাজে। কিন্তু পুরুষ তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার জন্য যেমন নারীর প্রতি সহিংসতা চালিয়ে যায়, তেমনি নারীরও পুরুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমতে থাকে, এধরনের নিপীড়নের কারণে। তাই সহমর্মিতার পরিবার ও সমাজ গঠন করতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। যেকোনো ধরনের নির্যাতনই সন্তানদের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে এবং তাদের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

লেখক : যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও কলাম লেখক।

এইচআর/জেআইএম

বিজ্ঞাপন