সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করতে হবে
বাংলাদেশে সিপিএ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয় ওঠে আসছে আলোচনায়। কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত ৫২টি দেশের ৪৪টি কেন্দ্রীয় ও ১৮০টি প্রাদেশিক সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারসহ প্রায় ৬০০ সংসদ সদস্য গুরুত্বপূর্ণ এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন। রোববার থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘কনটিনিউয়িং টু এনহ্যান্স দ্য হাই স্ট্যান্ডার্ড অব পারফরম্যান্স অব পার্লামেন্টারিয়ানস’। আমরা আশা করবো এই সম্মেলন থেকে গুরুত্বপূর্ণ অনেক আলোচনা হবে। যা থেকে নতুন দিশা পাওয়া যাবে।
রোববার সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বলেন ‘বাংলাদেশে একটি দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। জাতীয় সংসদ, বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় সরকারসহ আমরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অতন্দ্র প্রহরী স্বাধীন এবং শক্তিশালী গণমাধ্যম। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছে, নিশ্চিত করা হয়েছে তাদের (গণমাধ্যম) অবাধ স্বাধীনতা। মানুষের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই ওঠে এসেছে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর অমানবিক নির্যাতন এবং তাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করে দেয়া শুধু এ অঞ্চলে নয়, এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করছে। সাম্প্রতিককালে মিয়ানমার সরকারের এই নির্যাতনমূলক আচারণের ফলে সেখান থেকে ৬ লাখ ২২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। ১৯৭৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে আরও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনেও রোহিঙ্গা প্রসঙ্গটি আলোচনায় আসে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো হত্যা-নির্যাতনের ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) ৬৩তম সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা। তারা দেশে ফিরে গিয়ে তাদের জাতীয় ও প্রাদেশিক পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা উত্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সিপিএ সম্মেলনে বিশেষ রেজুলেশন (সিদ্ধান্ত প্রস্তাব) গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন সিপিএ চেয়ারপারসন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
ঢাকায় সিপিএ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন এক সময়ে যখন বিশ্বে সংঘাতময় পরিস্থিতি । বর্তমান বিশ্বে সন্ত্রাস, দুর্নীতি উন্নয়ন অগ্রগতির অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে সিপিএ সম্মেলনের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে- এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করতে পারাটাই বড় কথা।
এইচআর/জেআইএম