ধ্রুপদীর মায়ায় আলোকিত লালবাগ কেল্লা

প্রকাশিত: ১২:১১ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

ঢাকার প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতীক লালবাগ কেল্লা যেন ফিরে গেছে অন্য এক যুগে-যে যুগ ছিল সুর, তাল ও রাগের মোহনায় ভেসে থাকা সময়ের। কিংবদন্তি সঙ্গীতগুরু ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় আয়োজন করেছে এক মনোমুগ্ধকর ধ্রুপদী সংগীত সন্ধ্যার। ছবি: মাহবুব আলম

১/১০

ঐতিহাসিক এই দুর্গ রূপ নিয়েছে আলো ও সুরের মিলনমেলায়। কেল্লার প্রতিটি প্রাচীর, গম্বুজ ও দরজায় জ্বলছে নানারঙের আলোকসজ্জা, যেন ইতিহাস আর শিল্প এক হয়ে গেছে এই বিশেষ সন্ধ্যায়। ভেসে আসছে সেতারের তারে তারে মায়াবী ধ্বনি, তবলার তাল মিলছে বেহালার তানে-সকলেই যেন অনুভব করছেন এক অন্যরকম সাংস্কৃতিক জোয়ার।

২/১০

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ-যার হাত ধরে ভারতীয় উপমহাদেশে ধ্রুপদী সংগীত পেয়েছিল নতুন পরিচয়, নতুন ভাষা। মাইহার ঘরানার এই মহাগুরু শুধু একজন সংগীতশিল্পী নন; তিনি ছিলেন এক জীবন্ত প্রতিষ্ঠান। তার শিষ্যদের মধ্যে পণ্ডিত রবিশঙ্কর, আলী আকবর খাঁ, অন্নপূর্ণা দেবী-এদের মাধ্যমে ধ্রুপদী সংগীত পৌঁছেছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। তাই তাঁর জন্মবার্ষিকীতে এমন আয়োজন যেন কেবল স্মরণ নয়, এক সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতার প্রকাশও।

৩/১০

অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বক্তব্য রাখেন।

৪/১০

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সংস্কৃতিকর্মী, অভিনেতা ও পরিচালক আফজাল হোসেন। এসময় কূটনীতিক, শিল্পী ও সংস্কৃতি অনুরাগীরা উপস্থিত ছিলেন।

৫/১০

আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন দেশের বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী, শিল্পানুরাগী ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা। সেতার, সরোদ, তবলা, বাঁশি-প্রতিটি যন্ত্রই যেন বলছিল একটাই কথা: ‘সুর বেঁচে থাকুক, ঐতিহ্য টিকে থাকুক।’

৬/১০

সন্ধ্যার শুরুতে জাতীয় সংগীতের পর পরিবেশিত হয় রাগ ইয়ামন। ধীরে ধীরে রঙ বদলায় আকাশের, আর কেল্লার দেয়ালজুড়ে প্রতিফলিত হয় রাগের গভীরতা। দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে শুনেছেন তরুণ শিল্পীদের পরিবেশনা-যেখানে একদিকে ছিল ওস্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা, অন্যদিকে ছিল নতুন প্রজন্মের সুরের ভাষায় তার উত্তরাধিকার।

৭/১০

মঞ্চে একসময় তবলার সঙ্গে সেতারের জুগলবন্দিতে পুরো প্রাঙ্গণ যেন নিঃশব্দ হয়ে যায়। সুরের উত্থান-পতনের সঙ্গে লালবাগের প্রাচীন ইটগুলোও যেন কেঁপে ওঠে।

৮/১০

এই আয়োজন কেবল সংগীতের উৎসব নয়, বরং সময়ের সেতুবন্ধন-যেখানে অতীতের গৌরব ও বর্তমানের সৃজনশীলতা একসূত্রে গাঁথা।

৯/১০

শেষ পর্বে শিল্পীরা একসঙ্গে পরিবেশন করেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁকে উৎসর্গিত একটি বিশেষ রচনা। আলোর ঝলকানিতে, করতালির প্রতিধ্বনিতে, আর সুরের অবিরল প্রবাহে শেষ হয় ধ্রুপদী সংগীত সন্ধ্যা।

১০/১০

আজকের এই আয়োজন প্রমাণ করল, সংগীত শুধু বিনোদন নয়-এ এক চিরন্তন সাধনা, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলে। লালবাগ কেল্লার প্রাচীন দেয়াল আজ যেন সেই সাধনারই সাক্ষী।